আদাব অর্থ কি? | আদাব ও নমস্কার এর পার্থক্য
আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আদাব অর্থ কি। আদাব শব্দটি মূলত দক্ষিণ এশীয় অভিবাদন। উর্দু তাকে এই শব্দের উৎপত্তি হয়। এই শব্দটি আমাদের সকলের কাছে পরিচিত হলেও আমরা এই শব্দের অর্থ জানি না। এজন্য আজকের এই লেখায় জানিয়ে দিবো আদাব অর্থ কি। চলুন শুরু করা যাক–
আদাব অর্থ কি?
আদাব শব্দটি ইন্দো-ফারসি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এর অর্থ হল সম্মান, শ্রদ্ধা। আবার আরবিতে এই শব্দের অর্থ বিভিন্ন রকম হয়। তখন এই শব্দের অর্থ হয় বিনয়, নম্রতা, ভদ্রতা, সভ্যতা, কৃষ্টি, সুশিক্ষা, নৈতিকতা, মানবিকতা, শোভনীয়তা ও শিষ্টাচার ইত্যাদি।
আদাব ও নমস্কার এর পার্থক্য
আদাব ও নমস্কার শব্দ দুটি সমার্থক শব্দ। এই দুটি শব্দ বাংলায় অন্য দুই ভাষা থেকে এসেছে। আমরা আগেই জেনেছি যে আদাব শব্দের অর্থ শ্রদ্ধা,শিষ্টাচার ইত্যাদি। দক্ষিণ এশিয়া মুসলমানরা প্রথম আদাব শব্দ ব্যবহার প্রচলন করে অন্য ধর্মের মানুষদের প্রতি সম্মান প্রদানের জন্য। তাই আমরা যখন কারো সাথে দেখা হয় আদাব বলে সম্বোধন করে থাকি।
অন্যদিকে নমস্কার শব্দটি একটি সংস্কৃত শব্দ। নামাস্তের থেকে এসেছে এই নমস্কার। হিন্দি এবং সংস্কৃতে বলা হয় নমস্তে। নমস্তের বাংলা রুপি হলো নমস্কার। নমস্কার শব্দের অর্থ হলো প্রণাম করা, নত হওয়া ঈশ্বরের কাছে, অভিবাদন, সম্মান করা ইত্যাদি। যখন একজন সনাতন ধর্মী ব্যক্তি অন্য আরেকজন সনাতন ধর্মী ব্যক্তির সাথে দেখা হয় তখন নমস্কার বলে আলাপচারিতা শুরু করে।
নমস্কার শব্দের সমার্থক শব্দ গুলি হল শিষ্টাচার, অভিবাদন, সম্মান প্রদর্শন করা ইত্যাদি। সুতরাং অর্থের দিক থেকে নমস্কার ও আদাব শব্দ দুটি একই শব্দ। যেহেতু শব্দ দুটি বিদেশী ভাষা থেকে এসেছে তবুও বাংলা ভাষায় এ দুটি শব্দের অর্থ একই হয়।
হিন্দুদের আদাব দেওয়া যাবে কি?
ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। ইসলামের শিষ্টাচার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইসলামে পরিচিত অমুসলিম বা অপরিচিত মুসলিমদের সাথে সাক্ষাতে সময় কিভাবে আচরণ করতে হবে বা কি বলে সম্বোধন করতে হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে।এজন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাম শিষ্টাচার সম্পর্কে বলেছেন,
‘নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুয়তের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ।’ (আবু দাউদ: ৪৭৭৬; মেশকাত: ৫০৬০; সহিহুল জামে: ১৯৯২-৯৩)।
কখনো অমুসলিম ব্যক্তি বা সনাতন ধর্মী ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া যাবে না। কারণ আমরা মুসলিমরা যখন সালাম দেই তখন শান্তি বর্ষিত হয়। কিন্তু অমুসলিমরা কখনোই আল্লাহ তাআলা বা রাসুলের কথা বিশ্বাস করে না। তাই তাদের জন্য জন্য কখনো আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি কামনা করা যাবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,
ا تبدءوا اليهود ولا النصارى بالسلام ‘তোমরা ইহুদি ও খৃষ্টানদের প্রথমে সালাম দেবে না।’ (সহিহ মুসলিম: ২১৬৭)।
তবে যদি কোন অমুসলিমকে বা সনাতন ব্যক্তিকে প্রয়োজনে সালাম দিতে হয় বা দেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় না থাকলে তখন ‘আসসালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলতে হবে।
আরো দেখুনঃ
সর্বশেষ কথা
আশা করি প্রিয় পাঠকগণ আপনারা সকলেই জানতে পেরেছেন যে, আদাব অর্থ কি। আমরা সকলেই এই শব্দ ব্যবহার করি, কিন্তু আমরা আগে অনেকে এই শব্দের অর্থ জানতাম না। তাই নিত্য নতুন সকল শব্দের অর্থ জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। তাছাড়া এই লেখা নিয়ে যদি আপনাদের কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে ভুলবেন না।