পরমাণু কাকে বলে?
পরমাণু কাকে বলে? | পরমাণু গঠন
পরমাণু হচ্ছে রসায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আর এটি রসায়ন বিজ্ঞানের মৌলিক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য রসায়ন বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে আলোচনা করব। সবার আগে পরমাণু সম্পর্কে জানব।
পরমাণু কাকে বলে এবং পরমাণুর গঠন সম্পর্কিত একটি সুন্দর আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। যাতে করে আপনারা আমাদের এই আর্টিকেল থেকে পরমাণু সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।
পরমাণু কাকে বলে?
পরমাণু সম্পর্কে জানার আগে সবার আগে জানতে হবে পরমাণু কি বা পরমাণু কাকে বলে? পরমাণু হচ্ছে রাসায়নিক উপাদান গুলির মৌলিক একক বা ক্ষুদ্র কণা। পরমাণুর আকার এতটাই ছোট যারা সাধারণভাবে ভাবা অকল্পনীয়। পরমাণু ক্ষুদ্র হওয়ায় এই পরমাণু কে আর ভাঙ্গা যায় না।
অর্থাৎ পদার্থের মধ্যে প্রতি ক্ষুদ্রতম অংশ। পৃথিবীর সমস্ত কঠিন, তরল, গ্যাস এবং আয়নের গঠনের মূলে রয়েছে আধান গ্রস্ত পরমাণু।
আমরা আগেই বলেছি যে পরমাণু খুবই ক্ষুদ্রতম। সাধারণভাবে যদি বলা যায় তাহলে দৈর্ঘ্য ১০০০ পিকোমিটারের সমান বা একটি চুলের ১ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ।
পরমাণু গঠন
এখন আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে পরমাণুর গঠন কেমন হতে পারে? আর এই পরমাণুর গঠন নিয়ে বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের গবেষণা করে গেছেন। আর তাদের মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম হচ্ছে ডাল্টনের পরমাণুবাদ। ডাল্টনের পরমাণুবাদ হচ্ছে আধুনিক রসায়নের ভিত্তি। কিন্তু এখন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
আরো দেখুনঃ বিজ্ঞান কাকে বলে?
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে প্রমাণিত হয় পরমাণুর তিনটি উপাদান রয়েছে। আর এই তিনটি উপাদান গুলো একদম সূক্ষ্ম কনিকা দিয়ে তৈরি। আর এদেরকে পরমাণুর মৌলিক কণিকা বলা হয়। নিউক্লিয়াস ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রোটন এবং আধান হীন নিউট্রন- কে একত্র করে গঠিত হয়।অন্যদিকে ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন ঘুরছে নিউক্লিয়াসকে ঘিরে।
পরমাণুর গঠন গুলো হচ্ছে-
- প্রোটন।
- নিউট্রন। এবং
- ইলেকট্রন।
প্রোটন:
প্রোটন একটি ধনাত্মক আধান বিশিষ্ট কণিকা। নিউক্লিয়াস বিদ্যমান। আর্নেস্ট রাদারফোর্ড ১৯১১ সালে পরমাণুর মধ্যে প্রোটন এর অস্তিত্ব প্রমাণ করেন। একটি পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা ইলেকট্রনের সমান হয়। সুতরাং একটি হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে যদি একটি ইলেকট্রন সরিয়ে নেয়া হয় তাহলে প্রোটন পাওয়া যাবে। প্রোটন কে সাধারণত p দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
প্রোটনের ভর 1.673×10−24g
যার পারমাণবিক ভর স্কেল অনুসারে 1.007276 amu বা atomic mass unit.
নিউট্রন:
ইলেকট্রন ও প্রোটন এর সমন্বয়ে নিউট্রন কণার সৃষ্টি হয়। ইলেকট্রনের আধান বিহীন হয়ে থাকে। নিউট্রন সবসময় নিউক্লিয়াস এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করে থাকে। নিউট্রন আবিষ্কার করেন ১৯৩২ সালে জেমস চ্যাডউইক। নিউট্রন পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থান করে সাথে সংযুক্ত থাকে। আর এই সম্মিলিত পরমানবিক ঘর বলা হয়। নিউট্রন কে n দ্বারা প্রকাশ করা হয়.
নিউট্রনের ভর 1.675×10−24g
যার পারমাণববিক ভর স্কেল অনুসারে 1.008665 amu বা atomic mass unit.
ইলেকট্রন:
ইলেকট্রন হচ্ছে পরমাণুর মূল কণিকা। ইলেকট্রন ঋণাত্মক আধানের হয়ে থাকে।সর্বপ্রথম ইলেকট্রনের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন স্যার জে. জে. থমসন হাজার ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে। অন্যদিকে পরমাণুর ইলেকট্রন উপাদান টির নাম দেন সর্বপ্রথম স্টোনি। ইলেকট্রন সবসময় নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঘূর্ণায়মান থাকে। আর ইলেকট্রন কে e প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ইলেকট্রনের ভর 9.1085×10−28g
উপসংহার: আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরমাণু কাকে বলে এবং পরমাণুর গঠন সম্পর্কে আমরা আজকে আলোচনা করেছি। এছাড়া আপনারা যদি আমাদের কাছ থেকে পরমাণু সম্পর্কে অথবা রসায়ন বিজ্ঞানের অন্য কোন টপিকস সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।