শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে?
শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে? | শারীরক শিক্ষার গুরুত্ব
শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে বিষয়টি সম্পর্কে কমবেশি সকলেই জানেন কিন্তু যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি যে শারীরিক শিক্ষা এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শারীরিক শিক্ষার মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারবে। মূলত শারীরিক শিক্ষা হচ্ছে শরীর সম্বন্ধীয় শারীরিক কসরত বা শরীরচর্চা। তবে শারীরিক শিক্ষা সম্পূর্ণ বিষয়টি শুধুমাত্র যে শরীর সম্বন্ধে আলোচনা করে এমন বিষয় নয় কারণ এর সাথে রয়েছে মানসিক বিকাশ এবং সামাজিক গুণাবলীর অনেক বিষয়।
আমরা সকলে প্রাথমিক ধারণা হিসেবে শারীরিক শিক্ষা কি সে সম্পর্কে সকলেই কম বেশি জানি কিন্তু শারীরিক শিক্ষা যে একটি আসলেই শিক্ষনীয় একটি বিষয় সম্পর্কে আমরা অনেকে ধারণা রাখি না। তাই শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে আপনারা যাতে সম্পূর্ণ বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জেনে নিতে পারেন তার জন্য আমরা আপনাদের সামনে এমন একটি আর্টিকেল নিয়ে এসেছি নিজেই আর্টিকেল এর মধ্যে আপনারা শারীরিক শিক্ষার সকল বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। এবং সেইসাথে শারীরিক কিভাবে সাথে সম্পর্কিত রয়েছে সে সম্পর্কে আপনারা জেনে নিতে পারবেন। চলুন তাহলে আমরা এবার জেনে নেই শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে সম্পর্কে।
আরো দেখুনঃ পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান.
শারীরিক শিক্ষা কি? | শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে?
আমরা আপনাদেরকে পূর্বেই বলেছি যে শারীরিক শিক্ষার কি/ শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে এই সম্পর্কে কমবেশি সকলেই জানে। আর এ বিষয়টি নিয়ে গবেষক এবং লেখকগণ তাদের মতামত অনুসারে বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন। মূল কথা হচ্ছে শারীর শিক্ষা হচ্ছে শারীরিক এবং মানসিক উন্নতির জন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুষম উন্নয়ন এবং মানসিক বিকাশ সেইসাথে সামাজিক গুণাবলি অর্জন এবং খেলাধুলার মাধ্যমে চিত্তবিনোদন করা।
- ডি. কে. ম্যাথিউস বলেন যে, শারীরিক কার্যকলাপ দ্বারা অর্জিত শিক্ষাই হচ্ছে শারীরিক শিক্ষা।
- হপ স্মিথ এবং ক্লিফটন বলেন যে, বিজ্ঞানসম্মত এবং কৌশলগত অঙ্গ সঞ্চালনের নামকেই শারীরিক শিক্ষা বলা হয়।
সুতরাং এসকল বিষয় হতে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়, খেলাধুলা, যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম এবং ধানের মত সকল ক্রিয়া-কলাপ দিকে শারীরিক শিক্ষা বলা হয়। এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
শারীরিক শিক্ষা English Meaning
শারীরিক শিক্ষা শব্দের ইংরেজি শব্দ হচ্ছে Physical Education. বর্তমান সময়ে শারীরিক শিক্ষা বিষয়টি পাঠক্রমের সংযুক্ত করা হয়েছে এবং এই বিষয়টিকে একটি আলাদা বিষয় হিসেবে শিক্ষার্থীদের কে অধ্যায়নের জন্য অনুপ্রাণিত করেছে। কারণ শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক জ্ঞান প্রত্যেক মানুষের জীবনে অত্যাবশ্যক। শুধু শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করে মানুষ নিজেদেরকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ রাখতে পারে এবং সামাজিক বিভিন্ন গুণাবলীতে নিজেকে গুণান্বিত করে তুলতে পারে। শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে জানার পাশাপাশি শারীরিক শিক্ষার ইংলিশ মিনিং প্রয়োজন।
শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব
আমরা প্রত্যেকেই জানি যে এই সুন্দর দেহের অধিকারী হিসেবে আমাদের কে তৈরি করেছেন মহান আল্লাহ। তার সৃষ্টিকে ধরে রাখা এবং আমাদের সৌন্দর্যকে ধরে রাখার জন্য আমাদের উচিত নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুস্বাস্থের অধিকারী হওয়া। তবে আমরা আমাদের জীবনকে উপভোগ করতে পারব এবং বিভিন্ন ক্রিয়া-কলাপ এর নিজেদেরকে অংশগ্রহণ করা তে পারবো।
বর্তমান সময়ে ছোট থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত জীবন পার করছে। যদিও বা শিশুদের তেমন কোনো কাজ থাকে না কিন্তু তাদের সুস্থ মানসিকতা ধরে রাখার জন্য অবশ্যই তাদের শারীরিক শিক্ষার নিয়ম নীতি অনুসরণ করা উচিত। কারণ এই বয়সে যদি তারা নিজেদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ সবল রাখতে পারে তাহলে তারা ভবিষ্যতে নিজেদেরকে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করে সমাজ এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। তাছাড়া যখন কোন ব্যক্তি তাহার কর্মব্যস্ত জীবনে পদার্পণ করেন তখন তার এই শারীরিক শিক্ষার বিষয় গুলো বাস্তব জীবনে বেশি কাজে দেয়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি যখন চাকরি জীবন পার করবেন তখন আপনি সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যস্ত জীবন পার করবেন। আর এই সারাদিনে যে কাজগুলো করা হয় সে কাজ গুলোর সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেয়ার জন্য মানসিকভাবে নিজেদেরকে প্রস্তুতি করতে হয় এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হয়। আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে উঠার পর নিয়মিত কিছু সাধারণ ব্যায়াম করেন এবং মানসিক প্রশান্তির জন্য যোগব্যায়াম, ইয়োগা করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার সারাদিনের কাজ করার অনেক শক্তি পাবেন।
এতে করে আপনাদের ক্লান্তি কম লাগবে এবং প্রতিদিন এই নিয়ম মাফিক চলছে আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন। নতুবা আপনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন, একটা সময় ক্লান্তিতে নিজেদের মধ্যে অস্থির মনোভাব তৈরি হয় এবং অবসর সৃষ্টি হয়।
তাই অবশ্যই সুস্থ সুন্দর এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা এবং নিজেদেরকে শারীরিক শিক্ষার আলোকে আলোকিত করা।
শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জন্য কেন শারীরিক শিক্ষা প্রয়োজন তা আমরা এখন বিস্তারিতভাবে জানাবো। তবে অবশ্যই আমাদের প্রত্যেকের জীবনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিশেষ করে তিনটি শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। তাই নিম্নে মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে আমরা আপনাদের সামনে শারীর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরব।
শারীরিক ওর শরীর বৃত্তীয় ভাবে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।
- শারীরিক সক্ষমতা ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।
- শারীরিক শিক্ষা সুস্থ দেহ গড়ে তোলে এবং সুস্থ মনের জন্য।
- দৈহিক গঠন সুন্দর এবং মজবুত করার জন্য
- খেলাধুলার কৌশল শেখার মধ্য দিয়ে খেলাধুলার পারদর্শিতা অর্জন করার জন্য
- শারীরিক শিক্ষা গতিশীল জৈবিক প্রয়োজন পূরণ করে থাকে।
মানসিক ও আত্মিক পরিপূর্ণতার জন্য শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
- সুস্থ মানসিক বিকাশ তৈরি করার জন্য।
- বুদ্ধিমত্তার ভিত গড়ে তোলার জন্য।
- কাজের এবং পড়াশোনার একঘেয়েমি দূর করার জন্য।
- চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশ করার জন্য।
- আত্ম সচেতনতা তৈরি করার জন্য।
- আত্মনির্ভরশীলতা এবং আত্মউপলব্ধি বৃদ্ধি করার জন্য।
- মানসিকভাবে আত্মহত্যা তৈরি এবং বৃদ্ধি করার জন্য।
- যেকোনো পরিবেশে নিজেদেরকে মানিয়ে চলার সাহায্য করার জন্য।
- বিভিন্ন ধরনের খারাপ দিক এবং ক্ষতিকর নেশা থেকে দূরে রাখার জন্য।
- সৃজনশীলতা মনোভাব তৈরি করার জন্য।
- অবসর সময় সঠিক কাজে লাগানোর জন্য এবং নিজেদেরকে চিত্ত বিনোদনের মাধ্যমে আনন্দ রাখার জন্য।
সামাজিকভাবে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
- বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলার জন্য।
- খেলাধুলার মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটে এবং মানবিক গুণগুলো তৈরি করতে সাহায্য করে।
- নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- দেশ ও সমাজের সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি পাওয়া যায়।
- মানুষের উদার মানসিকতা এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরি করা এবং জাগ্রত করার জন্য।
আরো দেখুনঃ
উপসংহার: শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা যারা অবগত ছিলেন না আশা করছি আপনারা আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। প্রত্যেকটি মানুষ চায় তিনি যেন সুস্থ এবং সুন্দর ভাবে জীবনকে উপভোগ করতে পারে। আর সুস্থ এবং সুন্দর ভাবে জীবনকে উপভোগ করার জন্য প্রয়োজন সুস্বাস্থ্য।
কারণ যদি কোন মানুষ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকেন তখনই তিনি মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারবেন এবং এই মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার কারণে সামাজিক গুণাবলীগুলো ও বৃদ্ধি পায় এবং নিজেকে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
তাই প্রত্যেক মানুষের উচিত সুস্থ এবং স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কিত জ্ঞান রাখা এবং নিজের মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। আপনারা যদি আমাদের আমাদের পক্ষ হতে আরও শিক্ষনীয় বিষয় জানতে চান তাহলে আমাদের সাথে থাকতে পারেন অথবা আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন যে আপনি কোন বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইছেন। ধন্যবাদ।
Nice post