ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম | ফেমিকন কেন খায়?
ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম | ফেমিকন কেন খায়? | ফেমিকন কি কাজ করে?
ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম অস্থায়ী যত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা রয়েছে তার মধ্যে ফেমিকন ঔষধ একটি। ফেমিকন একটি স্বল্পমাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রক ঔষধ। আপনি যদি লম্বা সময় পর্যন্ত বাচ্চা নিতে না চান তাহলে আপনাকে এটা নিয়মিত সেবন করতে হবে। অনেক আগে থেকেই স্বল্পমাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে এই পিলের বেশ জনপ্রিয়তাও রয়েছে।
যারা ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না তারা আজকের এই পোস্ট থেকে ভালোভাবে জেনে নিতে পারেন ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
আরো দেখুনঃ কোন পিল সবচেয়ে ভালো
ফেমিকন কি? | What is Femicon?
ফেমিকন একটি স্বল্পমাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি যা নারীর শরীরের সাথে মানিয়ে যায়। বাজারে অনেক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ ঔষধ পাওয়া যায় তার মধ্যে এটি (ফেমিকন) অন্যতম। এটি এসএমসি (SMC) কোম্পানির একটি পণ্য। বাংলাদেশে ইমারজেন্সি পিল হিসেবে যে সকল পিল পাওয়া যায় তার মধ্যে ফেমিকন ৯৭ – ৯৯.৯% কার্যকরী। এটি একটি অস্থায়ী এবং অপরিবর্তনশীল জন্মবিরতিকরণ পিল।
এতে উপাদান হিসেবে রয়েছে: সাদা পিল – Ethinyl Estradio BP0.03 মি.গ্রা. + Norgestrel BP 0.30 মি.গ্রা. এবং বাদামী পিল – Ferrous Fumarate BP 75.0 মি.গ্রা.।
ফেমিকন কেন খায় | Why does Femicon eat?
স্বাভাবিক ও স্বল্পমাত্রায় আপনি যদি আপনার জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে আপনি ফেমিকন ঔষধটি সেবন করবেন। এটি সেবনের ফলে আপনার গর্ভাশয় থেকে ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে পারে না মিলনের পরেও। কিন্তু মনে রাখবেন শুধুমাত্র নিয়মিত সেবনেই আপনি গর্ভধারণ রোধ করতে পারবেন ১ম পিরিয়ড থেকে পরবর্তী পিরিয়ড না হওয়া পর্যন্ত।
ফেমিকন কি কাজ করে?
ফেমিকন ট্যাবলেট এর কাজ হল আপনার মাসিকের শুরু থেকে পরবর্তী মাসিক পর্যন্ত যেন আপনি নিরাপদভাবে গর্ভধারণ প্রতিরোধ করতে পারেন। এটি ধারাবাহিকভাবে খাওয়ার একটি পিল। বিরতি দিয়ে খেলে এর কার্যকারিতা থাকবে না। একটি প্যাকেটে দুই রঙের পিল থাকে, সাদা পিল প্রথম ২১ দিন আর পরবর্তী ০৭ (২২ তম দিন থেকে) দিন বাদামী রঙের। বাদামী রঙের পিল খাওয়া অবস্থায় পিরিয়ড হয়ে গেলেও কোর্স কমপ্লিট করতে হবে। নিয়মিত পিল খাওয়া অবস্থায় আপনি যতবারই সহবাস করেন না কেন এতে গর্ভধারণের কোন ভয় নেই।
ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম
- ফেমিকন ঔষধের একটি পাতায় মোট ২৮ টি পিল থাকে যেখানে ২১ টি সাদা বড়ি ও সাতটি বাদামি রঙ্গের।
- পিরিয়ড শুরুর দ্বিতীয় দিন থেকে একটি করে টানা ২১ দিন সাদা বড়ি খাবেন, ২১ দিন পর ২২ তম দিন থেকে বাদামী বড়ি খাওয়া শুরু করবেন।
- আপনি যদি সহবাস করেন বা না করেন তারপরও কিন্তু আপনাকে এই ঔষধ সেবন চালিয়ে যেতে হবে নিয়মিত। কোনদিন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে ভুলে গেলে পরের দিন ২ টা একসাথে খেয়ে নিন।
- এই ঔষধ সেবন বন্ধ করে দিলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই গর্ভধারণ করবেন।
- যতদিন পর্যন্ত বাচ্চা নিতে না চান ততদিন পর্যন্ত ফেমিকন খাওয়া চালিয়ে যান। ফেমিকন ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দিলেই পরবর্তীতে আপনার গর্ভাশয় গর্ভধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।
ফেমিকন পিলের কার্যকারিতা কত ঘন্টা?
ফেমিকন একটি মাসিক পিল। তাই টানা একমাস সেবন করতে হয়। এটি পিরিয়ড হওয়ার ২য় দিন থেকে খাওয়া শুরু করে টানা ১ মাস পর্যন্ত খেতে হয়। এই সময়ের ভিতরে আপনি যেকোনো সময় সহবাস করতে পারেন এতে গর্ভধারণ করার কোন সম্ভাবনা নেই। অনিয়মিত খেলে এই পিলের কার্যকারিতা থাকবে না এতে করে গর্ভধারণ করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
আরো দেখুনঃ
ফেমিকন খাওয়ার উপকারিতা
- এটি একটি নিরাপদ জন্মনিয়ন্ত্রক ঔষধ।
- ফেমিকন ওষুধ খেলে আপনার শারীরিক তেমন কোন জটিলতা দেখা দিবে না, স্বাভাবিকভাবে নারীদের শরীরে মানিয়ে যায়।
- এটি নিয়মিত গ্রহণ করলে আপনি গর্ভধারণ করবেন না কিন্তু বন্ধ করে দিলেই আপনি স্বাভাবিকভাবে গর্ভধারণ করবেন।
- মাসিক নিয়মিত হবে ও মাসিকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে।
- এটি আপনার ওয়ারিয়ান সিস্ট, যৌনাঙ্গজনিত প্রদাহ, পিরিয়ডের সময় ব্যথা ও আরো কিছু সমস্যা লাঘব করে।
- এটি ৯৭% – ৯৯.৯% কার্যকরী।
- গর্ভধারণ রোধ করা ছাড়াও এটি আপনার অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা কমিয়ে আনবে।
ফেমিকনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম ফেমিকন একটি স্বল্পমাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি তাই এর তেমন কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। এটা স্বাভাবিকভাবেই একজন নারীর শরীরে মানিয়ে যায়। একেক জনের শরীর একেক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি একেক ভাবে প্রতিক্রিয়া করে। কিন্তু এই পিলে তেমন কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না কিন্তু কিছু কিছু মহিলাদের খাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম প্রথম কিছু অসুবিধা হতে পারে যেমন: মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব।
কিন্তু চিন্তার কোন কারণ নেই এই ধরনের উপসর্গগুলো ২ – ৩ মাসের মধ্যেই আপনার আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। যদি এই উপসর্গগুলো স্বাভাবিক না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এই বিষয়ে।
আরো দেখুনঃ গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ.
ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম -FAQ
১. ফেমিকন কবে থেকে খাওয়া শুরু করতে হয়?
ফেমিকন সাধারণত পিরিয়ডের ১ম দিন থেকে ৫ম দিনের মধ্যে খাওয়া শুরু করতে হয়।
২. ফেমিকন খাওয়ার কত সময় পর্যন্ত কনডম ছাড়া সহবাস করতে পারবো?
পিরিয়ড শুরু হওয়া থেকে ফেমিকন খাওয়া শুরু করলে আপনি যেকোনো সময় সহবাস করতে পারবেন কনডম ছাড়া। এতে কোন সমস্যা নেই।
৩. ফেমিকন পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে কি করব?
আপনি যদি নিয়মিত ফেমিকন পিল খান তাহলে মাসিক বন্ধ হওয়ার পরও তা কন্টিনিউ করুন। মাসিক না হলে বাদামি রঙের পিল খান এতে করে মাসিক শুরু হবে। নাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. ফেমিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর সহবাস করা যায়?
মাসিক শুরু হওয়ার দ্বিতীয় দিন থেকে ৫ম দিনের মধ্যে ফেমিকন পিল খাওয়া শুরু করুন যতদিন পর্যন্ত আপনি বাচ্চা নিতে না চান। এর ভিতর আপনি সহবাস করলেও প্রতিদিন একটা করে ট্যাবলেট খেতে হবে না করলেও।
৫. ফেমিকন ট্যাবলেট কখন খাব?
প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে ফেমিকন ট্যাবলেট একটা করে খেতে হবে।
৬. ফেমিকন এর দাম কত?
ফেমিকন এর দাম ৩০ টাকা।
সর্বশেষ কথা: ফেমিকন একটি স্বল্পমাত্রার জন্ম ও নিরোধক বড়ি। অন্যান্য ইমার্জেন্সি পিলের মত আপনার শরীরে কোন ধরনের ক্ষতি করে না বরঞ্চ এটি আপনার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা কমিয়ে আনে।
অনেকেই ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতেন না কিন্তু আজকের পোস্টের মাধ্যমে তারা জানলেন। ফেমিকন খাওয়ার নিয়ম আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্ট করার জন্য।