ইন্টারনেট কী?
ইন্টারনেট কী ? ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে? | Internet Ki
আপনি কি জানতে চান আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ইন্টারনেট সম্পর্কে? জানতে চান ইন্টারনেট এর বিস্তর কার্যক্ষেত্র কিংবা এর আদি ইতিহাস সম্পর্কে ?
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অনন্য এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবন এক মুহূর্তে কল্পনা করা দুষ্কর।আমাদের জীবনের চলার পথে ইন্টারনেট কাজের গতিকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের অনবদ্য অবদানের কথা বলে এক বাক্যে শেষ করা যাবে। ইন্টারনেট ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের জন্য এক আশীর্বাদ রুপে পরিচালিত হচ্ছে।
ইন্টারনেট এর অর্থ কি? | What is internet?
ইন্টারনেট আমাদের জীবনের এক বিশস্ত বন্ধুরূপে প্রতীয়মান হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমরা কি জানি ইন্টারনেট কী ? কারা নিয়ে এসেছে ইন্টারনেট আমাদের সামনে? চলুন তাহলে জেনে নেই ইন্টারনেট সম্পর্কে। ইন্টারনেট একটি ইংরেজি শব্দ। মূলত ইথারনেট থেকে ইন্টারনেট শব্দটির উৎপত্তি। ইন্টারনেট শব্দের অর্থ “অন্তর্জাল”।পুরো বিশ্বকে একটি নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে যুক্ত করার মাধ্যমকে বলা হয় ইন্টারনেট। ইন্টারনেট এর মাধ্যমে সারা পৃথিবী একটি নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে যুক্ত করে রেখেছে। ইন্টারনেটের অসামান্য অবদানের কারণে আজ সারা পৃথিবী একটি পরিবারের মতো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ইন্টারনেট এর জনক কে?
ইন্টারনেট আমাদের জীবনে চলার গতিপথকে পাল্টে দিয়ে, আমাদের জীবনকে কর্মচঞ্চল ও সহজ করে তুলেছে। দৈনন্দিন জীবনে চলার ক্ষেত্র ইন্টারনেটের অবদানের কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। ইন্টারনেটে এর উপকারের কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমরা কি জানি কে এই ইন্টারনেট আবিষ্কারক যা আমাদের জীবনের গতিপথকে পালটে দিয়েছে?এই বিশাল নেটওয়ার্ক এর অন্তর্জাল ইন্টারনেট একদিনে তৈরী হয় নি! এর জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ রাত দিন কাজ করে গিয়েছে তাকে আজকের অবস্থানে আনতে।
আরো পড়ুন: ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো.
যদি আমরা ইন্টারনেট আবিষ্কারের কথা বলতে আসি তখন সবার আগে দুইজন ব্যক্তির নাম আসে সবার সামনে। তারা হলেন রবার্ট ই কান এবং ভিনটন জি কার্ফ।এই দুই গুণবান ব্যক্তি Transmission Control Protocol (TCP) and the Internet Protocol (IP) এই দুটি প্রটোকল আবিষ্কার করেন যা ইন্টারনেট আবিষ্কারের যাত্রাকে সহজ করে তুলেছে ।ধীরে ধীরে নতুন নতুন সংযোজনের ফলে আজ ইন্টারনেট এত্ত গতিশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমাদের সামনে।
ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে?
ইন্টারনেট এমন এক শব্দের নাম যা ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত থাকা অসম্ভব। বর্তমান সময়ে এক মুহূর্ত ইন্টারনেট ছাড়া আমাদদের জীবন ভাবা দুষ্কর। ইন্টারনেট আমাদের জীবনে কি কি কাজে লাগে তা এক বাক্যে বলা সম্ভব না। কিন্ত কিছু কিছু কথা না বললেই নয়। কিন্তু আমরা কি আসলেই জানি ইন্টারনেট আমাদের জীবনে চলার ক্ষেত্রে কি কি কাজে লাগে?চলুন তাহলে জেনে আসি ইন্টারনেট এর কাজের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে।
ই -লার্নিং বর্তমান সময়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর ই-লার্নিং থেকে শুরু করে ইন্টারনেট আমাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যাপক কাজে লাগে।
আমাদের বর্তমান সময়ে নানা ধরণের অফিশিয়াল কাজে ,ঘরে বসে অফিস করার কাজে প্রয়োজন পরে ইন্টারনেট এর।
একসময় গবেষকদের গবেষণার কাজে তথ্য পেতে বেশ সমস্যা হতো। কিন্তু ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে ঘরে বসেই আপনি আপনার গবেষণার কার্যাবলী সম্পাদন করতে পারবেন। সেই সাথে অন্যের গবেষণার কাজ ও দেখতে পারবেন।
আজকাল ব্যবসার অন্যতম ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট । ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে আজকাল হাজার হাজার ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
বহির্বিশ্বের সাথে অটুট যোগাযোগের ক্ষেত্র থেকে শুরু করে বিশ্বকে একটি গ্রামে রুপান্তর করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের অবদান অসম্ভাবী।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষ এখন পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে টাকা আয় করতে পারছে।
ইন্টারনেট এর মাধ্যমে মানুষ কেনাকাটা থেকে শুরু করে ,ডাক্তার থেকে চিকিৎসা নেওয়া,ঘরে বসে টিকিট কাটাসহ নানান সুবিধা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে।
নতুন করে কোনো কিছু শিখতে চাইলে খুব সহজে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে শিখতে পারবেন।
ঘরে বসে বিশ্বের যেকোনো দেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা থেকে শুরু করে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা যেকোনো অচেনা স্থানে হারিয়ে না গিয়ে সঠিম গন্তব্যে ফিরে আসতে পারছি।
আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষা সম্পর্কে জানতে পারছি সেই সাথে সেই ভাষা শিখে অন্যদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারছি।
ইন্টারনেট কত প্রকার ও কি কি?
ইন্টারনেট আমাদের নিত্যদিনের জীবনকে সহজ,সরল করে তুলেছে।পূর্বে যে কাজ করতে আমাদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা সেই কাজ ঘরে বসে করতে পারছি মুহূর্তে। আমাদের জীবনের চলার পথে নানা ধরণের বাধা খুব সহজে আপন করে নিয়েছে ইন্টারনেট। কিন্তু ইন্টারনেট এর প্রকারভেদ সম্পর্কে আমরা অনেকেই অজানা। চলু তাহলে জেনে আসি আমাদের সবার প্রিয় ইন্টারনেটের প্রকারভেদ সম্পর্কে।
ইন্টারনেটকে মূলত ৬ টি ভাগে ভাগ করা হয়। ৬ টি ভাগ হলো:
ডায়াল -আপ
ডিএসএল
স্যাটেলাইট
ক্যাবল
ওয়ারলেস
সেলুলার।
জেনে নিন ইন্টারনেটের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত :
ডায়াল আপ :
সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড ফোন লাইন থেকে যে ধরণের ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যায় তাকে ডায়াল- আপ বলে। এই প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে মোবাইলকে ইন্টারনেট কানেকশান শুরু হয়ে যায়।
ডিএসএল
ডায়াল আপ এর ধীরগতির জন্য এই সার্ভিসটি বাদ পড়ার কারণে বাজারে এসেছে ডিএসএল। ডিএসএল মূলত একটি ক্যাবল কানেকশান যা ডায়াল আপ থেকে ১০০ গুণ গতিসম্পন্ন।
স্যাটেলাইট:
দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিসেবার অন্যতম এক উদাহরণ হলো স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ তারহীন ইন্টারনেট পরিসেবা দেওয়া সক্ষম হয়েছে।
ক্যাবল:
ক্যাবল এর মাধ্যমে ব্রডব্যান্ডের সংযোগের ফলে কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। এটি খুবই জনপ্রিয়। অন্যান্য সকল মাধ্যম থেকে খুব দ্রুতগতি সম্পন্ন একটি মাধ্যম।
ওয়ারলেস
দুটো মাধ্যম পরস্পর কাছাকাছি দুরুত্বের যে মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে তা হলো ওয়ারলেস।
সেলুলার
মোবাইল ফোন যে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় তা হলো সেলুলার। এটি খুবই একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার
ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ক্ষেত্রে বেশ দাপটের সাথে প্রভাব বিস্তার করছে। শিক্ষাক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম নয়। ইন্টারনেটের আবিষ্কারের পর থেকে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বেশ সহজ হয়ে গিয়েছে।চলুন জেনে আসি কিভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অবদান রাখছে।
আগে শিক্ষার্থীরা যেমন পড়াশোনা করতে নানা জিনিস না বুঝার কারণের গৃহ শিক্ষকের নিকট বুঝতে যেত,কিন্তু ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে এখনো শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে, শিক্ষক ছাড়াই ঘরে বসে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছে।
কোনো অজানা কিছু জানতে চাইলে খুব সহজে ঘরে বসে সেই অজানা জিনিস জানার সুযোগ হচ্ছে ইন্টারনেটের কল্যাণে।
শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের ফলে ঘরে বসে নিজের পছন্দমতো সময়ের পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারছে।
ঘরে বসে ক্লাসের পাশাপাশি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।
ঘরে বসে বিশ্বের যেকোনো স্থানের বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষা অর্জন করতে পারবে।
নিজের অজানা বিষয় শেখার পাশাপাশি অন্যকে নিজের জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার সুবিধা শুধু ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্ভব।
কম্পিউটার থেকে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার | মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট
একসময় ইন্টারনেট শুধুমাত্র কম্পিউটারে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমার সাথে সাথে এখন ইন্টারনেট এর সর্বত্র ছাড়িয়ে গিয়েছে। আগে শুধুমাত্র কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা গেলেও সময়ের সাথে সাথে ইন্টারনেট এখন ল্যাপটপে ব্যবহৃত হচ্ছে। ল্যাপটপ যেখানে সেখানে সহজে বহনযোগ্য বিধায় মানুষ আজকাল কম্পিটারের তুলনায় ল্যাপটপ ব্যবহারে বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। কিন্তু মোবাইল ফোনের নিরবিচ্ছিন্ন বহনযোগ্যতা ফলে মানুষ আজকাল মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন: অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়.
মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে মানুষ খুব সহজে অচেনা দেশ সম্পর্কে জানতে পারছে, সেই সাথে অচেনা দেশে গিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে রাস্তা বের করতে পারছে। এছাড়াও মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার ফলে মানুষের দূরকে কাছে মনে হচ্ছে।তাই ইন্টারনেট মোবাইল ফোন হোক কিংবা ল্যাপটপ সকল ক্ষেত্রে আশীর্বাদ রুপে গৃহীত হচ্ছে।
শেষ কথা: ইন্টারনেট আমাদের নিত্যদিনের জীবনের ধরন পাল্টে দিয়ে জীবনক গতিশীল করে তুলেছে। নিত্যদিনের কাজে ইন্টারনেটের ব্যবহার আমাদের নানা ক্ষেত্রে বেশ সাহায্য পরায়ণ বন্ধুরুপে আবির্ভূত হয়েছে। খুব বেশি দূরে নয় যখন ইন্টারনেটের উপর ভর করে আমাদের এই পৃথিবী চলবে।
এই কনটেন্টে আমরা যা শিখেছি:
ইন্টারনেট কী, কাকে বলে, ইন্টারনেট আবিষ্কার, জনক কে। ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে, কত প্রকার ও কি কি। শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট।