বুস্টার ডোজ কি?
বুস্টার ডোজ কি? বুস্টার ডোজ কিভাবে নিতে হবে?
করোনাভাইরাস এ যাবৎকালের সবচাইতে আক্রমনাত্মক ভাইরাস। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদেরকে এখন পর্যন্ত দুইটি ভ্যাকসিন সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে আর তৃতীয়টি হচ্ছে বুস্টার ব্যবস্থা। আর এই বুস্টার ডোজ আমাদের শরীরকে আরো প্রতিরক্ষা শক্তি দিচ্ছে। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট আসার পর থেকেই বুস্টার ডোজ পুরো বিশ্বে সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পৃথিবীর ৯৫টি দেশে ছড়িয়ে পরেছে। আসুন আজ বিস্তারিতভাবে জানি বুস্টার ডোজ কি? কিভাবে এই বুস্টার ডোজ গ্রহণ করবেন।
বুস্টার ডোজ কি?
বুস্টার ডোজ হচ্ছে করোনা থেকে শরীরকে প্রতিরক্ষা দেওয়ার জন্য সবচাইতে কার্যকরী একটি ভ্যাকসিন। যারা আগের দুইটি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন শুধুমাত্র তারাই বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে পারবেন। আমাদের দেশে বর্তমানে মজুদ রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা (কোভিশিল্ড), ফাইজার, মডার্না এবং সিনোফার্মের টিকা। দেশে বেশিরভাগ মানুষকে প্রাথমিক ২টি ডোজ দেওয়া হয়েছে কোভিশিল্ড বা অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং সিনোফার্মের টিকা দিয়ে। এখন তৃতীয় ডোজ কোনটি দেওয়া হবে? অ্যাস্ট্রাজেনেকা নাকি সিনোফার্ম বা ফাইজার? এই প্রশ্নটিই আপনার মনে জাগতেই পারে।
বেশিরভাগ স্থান এই তৃতীয় অর্থাৎ বুস্টার ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেওয়া হচ্ছে।
আরো দেখুনঃ ওমিক্রনে আক্রান্ত বুঝবেন কী করে?
বুস্টার ডোজ কাকে বলে?
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হিসেবে পুরো বিশ্বে তৃতীয় ব্যাক্তিটি বিনামূল্যে সবার কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে সেটিকে বুস্টার ডোজ বলা হয়। বুস্টার ডোজ কি আমাদের পুরোপুরি ভাবে জানা হয়ে গেছে আসুন এবার জানি কিভাবে এর সুবিধা আমরা গ্রহণ করব।
বুস্টার ডোজ কিভাবে নিতে হবে?
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস এর তৃতীয় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই টিকাটি নিতে হলে অবশ্যই আপনাকে আগের দুইটি টিকা কমপ্লিট করতে হবে।
অনেকেই কনফিউশনে আছেন যে করোনার বুস্টার ডোজ নিতে আবার নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে? কিন্তু না। নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে না। আমাদের যদি প্রথম দুটি ডোজ নেওয়া হয়ে থাকে এবং প্রথম দুই ডোজ টিকা নেওয়ার ছয় মাস পার হয়ে থাকে তাহলে আমি অটোমেটিক্যালি পূর্বের টিকাকেন্দ্র থেকে একটি এসএমএস পাবো এবং এসএসএসে উল্লেখ করা তারিখ অনুযায়ী আমরা পূর্বের সেন্টারে যাবো।’
আমরা পুরাতন টিকা কার্ড কিংবা করোনার সার্টিফিকেট নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো নিয়ে গেলে হবে না। কারণ, এগুলোতে তৃতীয় ডোজ দেওয়ার তথ্য লেখার কোনো জায়গা নেই। সেক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই সুরক্ষা অ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইট থেকে নতুন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড করে প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে যেতে হবে। নতুন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড দেওয়া সহজ। সুরক্ষা অ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে ডাউনলোড করতে পারবেন।’
বুস্টার ডোজ নিবন্ধন
বুস্টার ডোজ গ্রহণের জন্য আপনার কোন নিবন্ধন করতে হবে না। যদি ইতিমধ্যে দুইটি টিকা নিয়ে থাকেন তাহলে তার ছয় মাস এর ভিতরে আপনাকে আপনার উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারটা দে এসএমএস পাঠানো হবে। আর এস এম এস পাওয়ার পর আপনি টিকা কার্ড ডাউনলোড করে কেন্দ্রে চলে যাবেন। অনেকে এই টিকাটি গ্রহণ করতে চাচ্ছেন না। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন— লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ (ক্লাসিফায়েড মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ).
যাঁরা এর মধ্যে দুই ডোজ করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন, তাঁদের বলা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ ভ্যাকসিন গ্রহণকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, শুরুতে তাঁদের দেহে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল সময় অতিক্রমের পর তার মাত্রা কমে যাচ্ছে। অ্যান্টিবডি হচ্ছে রোগ প্রতিরোধক দেয়াল। এই দেয়াল সময়ের বিবর্তনে দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন প্রয়োজন পডে নতুন করে নির্মাণ। বুস্টার ডোজ হচ্ছে এই রোগ প্রতিরোধক দেয়ালের শক্তি বৃদ্ধির টনিক। সে কারণে অনেক রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর আবার প্রয়োজন পড়ে বুস্টার ডোজ। তাই এখন বুস্টার ডোজের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া উচিত।
আশাকরি বুস্টার ডোজ কি এবং কেন আপনাদের জন্য বুস্টার ডোজ কেন এতটা প্রয়োজনীয় তা আপনারা বুঝতে পেরে গিয়েছেন।