মনপুরা উপজেলার ইতিহাস
১৮৩৭ সালে, চট্টগ্রামের কমিশনার মিঃ রিকটস মনপুরা বন্দোবস্ত প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব মনপুরার ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।১ ৯৮৩ সালের ৭ই নভেম্বর মনপুরাকে পূর্ণাঙ্গ উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এবং এর ফলে এই অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নের পথ সুগম হয়।
মনপুরা নামকরন ইতিহাস
মনপুরা, বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি মনোরম দ্বীপ, যা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। ভোলা জেলা হতে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপটির নামকরণের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় রহস্য।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য-
মনপুরার প্রবীণ ব্যক্তিদের মতে, এই দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্য আগন্তুকদের মন ভরিয়ে দিত। তাই এর নামকরণ করা হয় “মনপুরা”।
মনগাজী শাহবাজপুর জমিদার-
অনেকে মনে করেন, মনগাজী শাহবাজপুর জমিদারের নামানুসারে এই দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছে।
বাঘের উপদ্রব-
আরেকটি জনশ্রুতি অনুসারে, এই দ্বীপে প্রচুর বাঘ ও হাতি বাস করত। একবার “মনগাজী” নামের এক ব্যক্তিকে বাঘ আক্রমণ করে হত্যা করে। তার নাম অনুসারে নামকরণ করা হয় “মনপুরা”।
মনপুরা উপজেলার ইতিহাস প্রশাসনিক
এই উপজেলার প্রশাসনিক ইতিহাস অনেক পুরাতন। সেজন্য মনপুরা উপজেলার ইতিহাস কে ধাপে ধাপে শেয়ার করা হলো।
প্রাথমিক সময়-
১৮৭৫ সাল পর্যন্ত মনপুরা বাকেরগঞ্জের ১৩৩ টি চরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৮১ সালে এটি দক্ষিণ শাহবাজপুরের জমিদারদের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। জেমস রেনেলের ১৭৭৮ সালের মানচিত্রে মনপুরা দ্বীপ চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ আমল-
১৮৩৪ সালে সুন্দরবনের কমিশনার ডামপেয়ার মনপুরা বাজেয়াপ্ত করেন। ১৮৩৭ সালে চট্টগ্রামের কমিশনার মিঃ রিকটস মনপুরা বন্দোবস্ত প্রস্তাব দেন। ১৯৪৭ সালে পূর্ব চর কৃষ্ণপ্রসাদ, চর যতীন ও কয়েকটি মৌজার রাজা ছিলেন রাজেশকান্ত রায় ও হরেন্দ্র রায়।
স্বাধীনতার পর-
১৯৭০ সালের বন্যার পর মনপুরাকে পৃথক থানা হিসেবে উন্নীত করা হয়। ১৯৮৩ সালের ৭ ই নভেম্বর এটিকে পূর্ণাঙ্গ উপজেলায় উন্নীত করা হয়।
বর্তমান অবস্থা-
মনপুরাতে ৪টি ইউনিয়ন, ২২টি মৌজা ও ৩৩টি গ্রাম আছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম মনপুরা থানার আওতাধীন।
মনপুরা কৃষি ও জেলেদের দ্বীপ
মনপুরা বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। ডালচর কলাতলীর চরের সাথে সংযুক্ত এই দ্বীপটি তার উর্বর ভূমি ও সমৃদ্ধ জলজ সম্পদের জন্য পরিচিত।
কৃষিক্ষেত্র-
মনপুরার প্রধান জীবিকা হল কৃষি। ধান, মুগডাল, চিনাবাদাম, ও বিভিন্ন সবজি এখানকার প্রধান ফসল। ধান বছরে দুইবার (আউশ ও আমন) উৎপাদিত হয় এবং এর বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ৫০ হাজার টন। মুগডাল বছরে একবার উৎপাদিত হয় এবং এর বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ১০ হাজার টন। চিনাবাদাম বছরে একবার উৎপাদিত হয় এবং এর বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ২০ হাজার টন।
মৎস্যক্ষেত্র-
মনপুরার চারপাশের সমুদ্র ইলিশ মাছের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ইলিশ এখানে ধরা পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এখানে পাওয়া যায়।
More: