পদ কাকে বলে?
পদ কাকে বলে? | পদ কত প্রকার ও কি কি?
বাংলা ব্যাকরণ এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হচ্ছে পদ। মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য পদ এর ব্যবহার একান্ত বাঞ্চনীয়। তাই মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য আমরা সকলে পদ ব্যবহার করে থাকি।
আর এর জন্য আজ আমরা আপনাদের মাঝে পদ কাকে বলে সম্পর্কে আলোচনা করব। যাতে করে আপনারা খুব সহজে পদ ব্যবহার করতে পারেন এবং বাক্যের কোন অংশে কোন পদ ব্যবহার করা হয় সেগুলো বুঝতে পারেন।
আরো দেখুনঃ যোগ কাকে বলে?
পদ কাকে বলে?
মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দকে এক একটি পদ বলা হয়। সুতরাং আমরা যখন মনের ভাব প্রকাশ করি তখন আমরা প্রত্যেক টি শব্দের মধ্যে পদ এর ব্যবহার করি। যেমন আমি ভাত খাই। আমি হচ্ছে সর্বনাম পদ, ভাত হচ্ছে বিশেষ্য পদ এবং এই হচ্ছে ক্রিয়াপদ।
সুতরাং বাক্যের প্রত্যেকটি শব্দ পদ বলে।
পদ কত প্রকার ও কি কি?
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে পদ কত প্রকার হতে পারে। তবে আমরা অনেকেই জানি যে পদ পাঁচ প্রকার। কিন্তু আসলে আমাদের এটাই সঠিক নয়।
পদ প্রধানত দুই প্রকার। যেমনঃ
- নাম পদ।
- ক্রিয়াপদ।
নাম পদ চার প্রকার। যেমনঃ
- বিশেষ্য পদ।
- বিশেষণ পদ।
- সর্বনাম পদ।
- অব্যয় পদ।
বিশেষ্য পদ:
মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য যখন কোন বাক্যে কোন ব্যক্তি বস্তু জাতির নাম বোঝানো হয় তখন তাকে বিশেষ্য পদ বলে।
উদাহরণঃ
- রফিক স্কুলে যায়।
- শফিক ফুটবল খেলে।
বিশেষ্য পদ কে আবার ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
- ব্যক্তিবাচক বিশেষ্য।
- বস্তুবাচক বিশেষ্য।
- জাতিবাচক বিশেষ্য।
- গুণবাচক বিশেষ্য।
- সমষ্টিবাচক বিশেষ্য।
- ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য।
বিশেষণ পদ:
মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাক্যে ব্যবহৃত বিশেষ্য, সর্বনাম এবং ক্রিয়াপদের দোষ গুণ অবস্থা সংখ্যা পরিমাণ ইত্যাদি বোঝায় তখন তাকে বিশেষণ পদ বলে।
উদাহরণঃ
- পাথরের অংশটুকু চকচক করছে।
- রফিক ভালো ছাত্র।
বিশেষণ পদ কি আবার চার ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
- বিশেষ্য বিশেষণ।
- বিশেষণের বিশেষণ।
- ক্রিয়া বিশেষণ।
- সর্বনামের বিশেষণ।
সর্বনাম পদ:
মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বিশেষ্য পদের পরিবর্তে আমরা যে পথ ব্যবহার করি সেটি হচ্ছে সর্বনাম পদ।
উদাহরণঃ
- করিম নিয়মিত স্কুলে যায়। প্রতিদিন সে বাড়ির কাজ করে থাকে। সে বিকেলে মাঠে খেলতে যায়।
- মি. শফিক একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। তিনি প্রতিদিন সঠিক সময় অফিসে পৌঁছায়।
সর্বনাম পদ কে আবার 8 ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
- ব্যক্তিবাচক সর্বনাম পদ।
- নির্দেশক সর্বনাম পদ।
- অনির্দেশক সর্বনাম পদ।
- আত্মবাচক সর্বনাম পদ।
- প্রশ্ন বাচক সর্বনাম পদ।
- সাপেক্ষ সর্বনাম পদ।
- সমষ্টিবাচক সর্বনাম পদ।
- পারস্পারিক সর্বনাম পদ।
অব্যয় পদ:
অব্যয় শব্দটির অর্থ হচ্ছে অপরিবর্তনশীল বা অপরিবর্তনীয়। সুতরাং মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় এবং সেই পদগুলি কোন ভাবে পরিবর্তন করা যায় না সে পদগুলোকে অব্যয় পদ বলে।
উদাহরণঃ
- রফিক ও শফিক একসাথে ফুটবল খেলে।
- করিম খুব সরল কিন্তু সে সৎ।
অব্যয় পদ কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
- পদান্বয়ী অব্যয় পদ।
- অনন্বয়ী অব্যয় পদ।
- বাক্যান্বয়ী অব্যয় পদ।
ক্রিয়াপদ:
মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাক্যে ব্যবহৃত কোন কাজ বোঝানো ক্রিয়াপদ বলে।
উদাহরণঃ
- রফিক বই পড়ছে।
- কুড়ি মাছ ধরছে।
ক্রিয়াপদকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
- সমাপিকা ক্রিয়া।
- অসমাপিকা ক্রিয়া।
আরো দেখুনঃ
উপসংহার: শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে পদ একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এছাড়াও বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য আমাদের পদ ব্যবহার করে মনের ভাব প্রকাশ করতে হয়। আশা করি আমাদের আর্টিকেল থেকে আপনারা পদ কাকে বলে? এবং পদ সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। এছাড়াও যদি আপনারা আমাদের কাছ থেকে পদ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের নিম্নের কমেন্টে এসে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।