পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া
পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া | Toll rent of Padma bridge
বাংলাদেশে মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর কাজ শেষের দিকে চলে এসেছে। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া বাংলাদেশ সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। ঢাকা জেলা হতে দক্ষিণাঞ্চলের যে কোন জেলার দূরত্ব ও সড়ক পথে অনেক বেশি। তাই পদ্মা সেতু প্রকল্প নেয়া হয়েছে এবং সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
সম্প্রতি পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মতবাদের সৃষ্টি হচ্ছে। কোন এক শ্রেণীর মানুষ বলছে এই টুল ভাড়া অতিরিক্ত আবার কোন শ্রেণীর মানুষ বলছে বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে টোল ভাড়া স্থিতিশীল আছে। আরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ার মাধ্যমে সবাই পদ্মা সেতুর টোল লিস্ট জানতে চাইছে। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া সম্পর্কিত একটি আর্টিকেল নিয়ে এসেছি। এখান থেকে সম্পূর্ণ বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নিই আজকের বিষয়।
আরো দেখুনঃ পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান.
পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া
পদ্মা সেতুর টোল ভাড়ার লিস্ট দেখার পূর্বে আমরা আগে জেনে নেই পদ্মা সেতুর সাথে ফেরি পারাপারের যাত্রী অতিরিক্ত ব্যয় হয় এবং এর বিস্তারিত তথ্য।
বর্তমানে মাওয়া ঘাট হতে ফেরি পারাপারের সময় প্রত্যেক যাত্রীর ৩০.৫০ টাকা থেকে ৪৬. ৫০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় বহন করা লাগে। কিন্তু অন্যদিকে পদ্মাসেতুর যখন যাত্রাপালা পর করবে তখন প্রত্যেক যাত্রীর ৪৫ টাকা থেকে ৬৯ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হবে।
আপনারা হয়তো এখানে ভাবতে পারেন তাহলে ফেরিতে যেহেতু টাকা কম ব্যয় হয় সেতু ফেরি পারাপার ভালো হবে। কিন্তু এখানে একটি বিষয় রয়েছে, আর সেটি হচ্ছে আমরা পূর্বে জেনেছি যে ঢাকা হতে দক্ষিণাঞ্চলের দূরত্ব অনেক বেশি এতে করে যাত্রীদের অনেক সময় ব্যয় হয় সেই সাথে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর এই সমস্যাকে মূল কেন্দ্র করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়। যেহেতু পদ্মাসেতুর ব্যবহারের ফলে আপনারা কম সময়ে আপনাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারবেন এবং কোন ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে নিজের গন্তব্যস্থলে যেতে পারবেন সেহেতু এখানে কিছুটা টোল ভাড়া বেশি দেয়াই শ্রেয় বলে মনে করি।
সুতরাং টোলের কারণে ভাড়া বৃদ্ধি পেলেও দূরত্ব এবং সময়ের সাশ্রয় হয়। তবে বাংলাদেশের বর্তমান সড়কপথের অবস্থা এমন যে জ্যামের ভোগান্তিতে মানুষকে দুর্ভোগের ফেলে দেয়। তাই স্বাচ্ছন্দে নিজের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে চাইলে অবশ্যই পদ্মা সেতু ব্যবহার করতে পারেন।
এদিকে পণ্যবাহী যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। যে যানবাহনের আসন সংখ্যা ৩১ টি অথবা এর কম সেই যানবাহনের পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৪০০ টাকা। যে যানবাহনে ৩১ টি সিট এর অধিক সিট রয়েছে সেগুলো ২ হাজার টাকা। আর বড় বাস ২ হাজার ৪০০ টাকা।
সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ( বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানায় যে, পদ্মা সেতুর টোল বাড়ার উপর নির্ভর করবে যাত্রীদের ভাড়া। এদিকে সময় এবং ভোগান্তিকে দূরে রাখার জন্য যারা পদ্মা সেতু ব্যবহার করবেন সে সকল যাত্রীদের অবশ্যই ভাড়া বেশি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হবে। কারণ ফেরি ভাড়া হিসেবে পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া তুলনামূলক বেশি। তবে এখন পর্যন্ত এই যাত্রীদের ভাড়া কত নেয়া হবে তা সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নি। ধারণা করা হচ্ছে জুনের মাঝামাঝি সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পদ্মা সেতুর অপর যাত্রী ভাড়া নেয়া হবে।
পদ্মা সেতুতে প্রত্যেক যানবাহনের ওপর নির্ধারণ করা হবে টোল ভাড়া। বাসের টোল ভাড়া নির্ধারণ করা হবে আসন সংখ্যা হিসেবে। এভাবে ট্রাকের আকার অনুসারে ট্রাকের ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। প্রত্যেকটি যানবাহনের ওপর টোল ভাড়া আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই আপনারা যারা প্রত্যেক যানবাহনের ভাড়া সম্পর্কে তালিকা হিসেবে পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া জানতে চান তারা আমাদের নিম্নের তালিকাটি লক্ষ করতে পারেন।
পরিবহন | পদ্মা সেতু | ফেরি | জ্বালানি সাশ্রয় |
মোটরসাইকেল | ১০০ | ৭০ | ১৩৪ |
প্রাইভেট কার এবং জীব | ৭৫০ | ৫০০ | ৫৭৯ |
মাইক্রোবাস | ১৩০০ | ৮৬০ | ৫৭৯ |
ছোট বাস (৩১ টি আসন পর্যন্ত) | ১৪০০ | ১২০০ | ১৭৮৫ |
মাঝারি বাস (৩২ টি আসনের অধিক) | ২০০০ | ১৭১০ | ১৭৮৫ |
বড় বাস (৩ এক্সেল) | ২৪০০ | ২৩১০ | ১৭৮৫ |
ছোট ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) | ১৬০০ | ১০৮০ | ১১৭০ |
মাঝারি ট্রাক (৫ – ৮ টন পর্যন্ত) | ২১০০ | ১১৭০ | |
মাঝারি ট্রাক (৮ – ১১ টন পর্যন্ত) | ২৮০০ | ১৮৫০ | ১১৭০ |
বি. দ্রঃ আমরা আপনাদেরকে পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া যে তালিকাটি দিচ্ছি তার সম্পূর্ণ সরকার থেকে অনুমোদিত তালিকা।
আরো দেখুনঃ বাংলাদেশের আয়তন কত?
উপসংহারঃ আপনারা যারা পদ্মা সেতুর টোল ভাড়া সম্পর্কে জানতে চাইছিলেন এবং সিলভার আরেকটি লিস্ট পেতে চাই ছিলেন তারা আশা করছি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে ইতিমধ্যে পেয়ে গিয়েছেন। তাছাড়া আপনারা যদি পদ্মা সেতু সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমাদের বাংলাদেশের সকল মানুষের সড়ক পথে যাতায়াতের অন্যতম অভিযোগ ছিল জ্যাম। আর এই জমিকে কেন্দ্র করে ঢাকা হতে দক্ষিণাঞ্চলের দূরত্ব কমিয়ে দেয়ার জন্য এবং সময় সাশ্রয় করার জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ধন্যবাদ।