মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
মধু ও কালোজিরার নাম শুনেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে আমাদের বিশ্বে। সারা বিশ্বে মধু ও কালোজিরাকে ঘরোয়া ঔষধ হিসাবে সেবন করছে অনেকেই। মধু ও কালিজিরা গুনাগুন লিখে পরিপূর্ণ ভাবে প্রকাশ করা সম্ভব না। তবুও আমরা আমাদের এই লেখাটির মাঝে আপনাদের মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে এমন কিছু অজানা তথ্য দিবো যে আপনি শুনে অবাক হতে বাধ্য হবেন।
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারী ও নিময় সম্পর্কে অজানা কিছু অবাক করা তথ্য জানতে পুরো লেখাটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো। হতে পারে লেখাটি থেকে আপনি এমন কিছু জানতে পারবেন যা শুধু আপনার জন্য মানে আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাহলে এবার জানা যাক মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা।
যদি আপনার এসিডিটি অথবা কিডনি ইনফেকশন জনিত সমস্যা থাকে তো আপনি আমাদের নিচের লেখা গুলো ভালো ভাবে পড়বেন। আশা করি আপনার উপকার হবে। তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা। প্রথমে আসি মধুর কথা নিয়ে
আরো দেখুনঃ ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
মধু:
মধু শুধু বাংলাদেশ নয় সারা পৃথিবীতে পরিচিত একটি নাম। মধু সাধারণত মৌমাছি হতে তৈরি এবং বিভিন্ন ফুলের নির্যাসের মিশ্রণ হতে মধু তৈরি হয়।
মধু সাধারণত একধরনের মিষ্টি জাতীয় ঘন তরল পদার্থ। মধু আমরা পেয়ে থাকি মৌচাক থেকে। এক দল মৌমাছি বিভিন্ন ফুল হতে নির্যাস নিয়ে মৌচাক তৈরি করে। যা মানুষের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি হয় বলেই মধুকে বিভিন্ন রোগের প্রথমিক ঔষধ বলা হয়।
তবে বাংলাদেশ মধু উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে রয়েছে। প্রচীন কাল থেকেই মধুর বেশির ভাগ যোগানটা আসে সুন্দরবন থেকে।
ইতিমধ্যেই আপনারা মধু সম্পর্কে আংশিক জেনেছেন। মধু সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এর পুষ্টিগুন খাওয়ার নিয়ম ও উপকারী সম্পর্কে জানতে পড়তে থাকুন মধু ও কালিজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারীতা। এখন জানা যাক কালোজিরা সম্পর্কে।
কালোজিরা (kalijira):
কালোজিরা (kalijira) সাধারণত বাংলাদেশের খুব পরিচিত একটি নাম এবং এটি দেখতে দানাদার ছোট ছোট কালো জাতীয়।এই কালোজিরার ভিতরে অন্তর্নিহিত উপাদান এবং উপকারী সব গুনাগুন দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা ।
তাছাড়াও কালোজিরা যে কতটা গুনাগুন এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাদ্য দ্রব্য তা উল্লেখ আছে ইসলাম ধর্মের পবিত্র কোরআনে। এছাড়া কালোজিরার মধ্যে বিভিন্ন পুষ্টিগুণের উপাদান এর মাঝে উল্লেখযোগ্য উপাদান হলো :
- ফসফেট।
- লৌহ।
- ফসফরাস।
- কার্বোহাইড্রেট।
কালোজিরাই রয়েছে বিভিন্ন অলৌকিক ক্ষমতা এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে খুব প্রয়োজনীয় হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও কালোজিরা বিভিন্ন রোগের প্রতিষধক হিসাবে কাজ করে।
মধু ও কালোজিরা সম্পর্কে কিছুটা ধারনা আপনারা পেয়ে গেছেন আশা করি। এদের উপকার সম্পর্কে জানতে পড়তে থাকুন আমাদের লেখাটি।
আরো দেখুনঃ অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা.
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
কালোজিরাই ও মধুতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন ইসলাম হাদিসের মতে যে মৃত্যু ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ হচ্ছে কালোজিরা। এছাড়াও কালোজিরা অনেক রোগের ঔষধ যেমন নিদ্রাহীনতা এবং মাথা ব্যাথা রূপ-লাবণ্য ইত্যাদি অপরদিকে মধুর গুনাগুনও অতুলনীয়। মধু বিভিন্ন রোগের মহাঔষধ। হৃদপিন্ডের রোগ যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে ক্ষত বা পোড়া স্থানে কোষ্ঠকাঠিন্য রক্তচাপ দাঁতের ব্যাথা রূপচর্চা ও কাশির মতো অসুখেও মধু ব্যবহার করা হয়।
ওপরের আলোচনা থেকে মধু ও কালোজিরার উপকারীতা সম্পর্কে জেনেছেন চলুন এবার জানা যাক মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম।
নিদ্রাহীনতা:
কেউ যদি অনিদ্রা নিয়ে চিন্তিত থাকে তাহলো সে আমাদের নিম্নের উপায়টি একবার অনুসরণ করে দেখতে পারে। প্রথমে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে এক চামচ কালোজিরা মিশিয়ে ঘুমের পূর্বে একবার সেবন করে দেখবেন সেই রাত্রিভর ঘুমে বিভোর থাকবে। তারপরেই আপনি বুঝতে পারবেন অনিদ্রা দূর করার জন্য কতটা উপকারী।
দাঁতের ব্যাথা:
মধুর হাজারো উপকারিতার মাঝে দাঁতের ব্যাথায় মধু অত্যন্ত সহায়ক করে। নিয়মিত মধুর সাথে কালোজিরা সকালে সেবন করেন তাহলে দেখবেন আপনার দাতের ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে।
এছাড়াও মাথা ব্যাথার সময় কিভাবে আপনি মধু ও কালোজিরে সেবন করবেন অনেকেই ভাবছেন তো আমাদের লেখাটি পড়ুন।
মাথা ব্যাথায় কালোজিরা ও মধুর। (kalijira):
খুব মাথা ব্যাথায় কালোজিরার কোনো বিকল্প নেই। কালোজিরার গুড়ো পরিমাণ মতো নিয়ে তার অর্ধেক পরিমাণ লবঙ্গ এবং অর্ধেক পরিমাণ মৌরিফুল একসাথে মিশিয়ে মাথা ব্যাথার সময় দুধের সাথে সেবন করলে মাথা ব্যাথা নিমিষেই কমে যাবে। এছাড়া কালিজিরার তেল ব্যবহার করে খুব সহজেই মাথা ব্যাথা দূর করা সম্ভব। কালোজিরার তেল ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।
কালোজিরার তেল ব্যবহারে মুখের ত্বক ফর্সা হয় এবং এসিডদগ্ধ কিংবা পোড়া স্থানে যদি চামড়া কালো হয়ে যায় বা পুড়ে যায় সে ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল মাখলে খুব অল্প দিনেই সেই জায়গার এসিডদগ্ধ বা পোড়া দাগ দূর হয়ে যায়।
মধু আয়ুর্বেদ এর মতে সাধারণত মহৌষধ হিসেবে কাজ করে থাকে তাই মধু সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানা আমাদের সকলের জন্য অপরিহার্য।
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে মধু (modhu):
আমাদের অনেকের বিভিন্ন গোপন রোগ হয়ে থাকে এসব গোপন সমস্যা একমাত্র ঘরোয়া ঔষধ হচ্ছে মধু। এছাড়াও মধু যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে । সাধারণত প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে যৌন শক্তিতে ভালো ফলাফল আসে এবং আপনার শরীরও সতেজ থাকবে । এাছাড়াও আপনি যদি কালোজিরার সাথে মধু মিশিয়ে সেবন করবেন তাহলে সেটা আপনার জন্য অনেক ভালো হবে।
এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য রোগেও মধুর ভুমিকা অপরিসীম। প্রথমে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের উপশম করা যায় । এছাড়াও এক চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে অজীর্ণ রোগ দূর হয়ে যায়।
মধু যে শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যই দূর করে তা কিন্তু নয় আপনারা জেনে অবাক হবেন যে মধু রক্তচাপ উপশম করতেও সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য মধুর গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিকল্প নেই। উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা লেবুর সাথে মধু মিশিয়ে খেলে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে খালি পেটে খাবেন দেখবেন কিছু দিনের মাঝে আপনার উচ্চ রক্তচাপের উপশয় ঘটবে। এছাড়াও দুর্বল রোগীদের জন্য মধু ও কালোজিরা অত্যন্ত সহায়ক কেননা এগুলো খাওয়ার পর সাধারণত দুর্বলতা দূর হয়। আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন এই মধু ও কালোজিরের কত উপকারিতা এবং মধুও কালোজিরে খাওয়ার নিয়ম।
সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারীতা
আপনারা ইতিমধ্যেই মধু ও কালোজিরার অনেক গুলো উপকারীতা সম্পর্কে জেনেছেন। মধু ও কালোজিরাতে রয়েছে নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধ করার মতো ক্ষমতা। প্রতি গ্রাম কালোজিরাতে অনেক গুলো পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হলো- প্রোটিন, ভিটামিন-বি, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, আয়রণ, ফসফরাস, কপার, জিংক এবং ফোলাসিন।
সকালে মধু ও কালোজিরা একসাথে খেলে আপনার শারীরিরের দূর্বলতা কেটে যাবে এবং শরীর সতেজ থাকবে। এছাড়া মধু ও কালোজিরা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাড়াই।
যারা দীর্ঘদিন ধরে বাতের ব্যাথ্যা জনিত সমস্যাই ভুগছেন তারা কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনি ভালো ফল পাবেন এছাড়াও নিয়মিত সকালে কালোজিরার সাথে মধু সেবনও করতে পারেন।
আরো দেখুনঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা.
সর্দি-কাশিতে আরাম পেতে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ ও রক্ত সঞ্চালন জনিত সমস্যা থাকলে সকালে খালি পেটে মধু সাথে কালোজিরা সেবন করলে অল্প দিনের মাঝেই আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন। মধু ও কালোজিরা শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই করে না বরং আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসাতেও ভূমিকা রাখে। এভাবেই মধু ও কালোজিরা মানুষের মহা ঔষধ হিসজবে কাজ করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন করে।
আশা করছি আমাদের লেখাটি সম্পন্ন পড়ে আপনি মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারেছেন।
যদি আপনাদের মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে আরও কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলো আমাদের কমেন্টে জানাবেন আমরা সকল প্রশ্নের যথাযথ উওর দেওয়ার চেষ্টা করবো।