আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে?
কম্পিউটার কি? | আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে? | আধুনিক কম্পিউটারের ইতিহাস
বর্তমান বিশ্বে বহুল প্রচলিত ইলেকট্রিক যন্ত্র হচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটার চিনে না বা দেখেন নি এমন ব্যাক্তি খুজে পাওয়াটা খুবই কস্টকর। আজ wikipediabangla এর এই লেখাটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে? এবং কম্পিউটার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
কম্পিউটার কি?
কম্পিউটার হচ্ছে একটি ইলেকট্রিক যন্ত্র। যার দিক নির্দেশনা অনুযায়ী বহুবিধ কাজে সক্ষম।
কম্পিউটার কাকে বলে?
কম্পিউটার হলো বিশেষ এক ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র। যে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র টি বিভিন্ন প্রকারের হার্ডওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত। এবং এই কম্পিউটার নামক বিশেষ যন্ত্রের মধ্যে এক বা একাধিক অপারেটিং সিস্টেম থাকে। যার মাধ্যমে এই কম্পিউটার নামক যন্ত্র কে পরিচালনা করা হয়। এবং কম্পিউটার নামক এই যন্ত্রের মধ্যে বিশেষ মেমোরি কার্ড থাকে। যার সাহায্য নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা কে ইনপুট করা হয়। এবং ইনপুট করা ডাটা কে প্রসেসিং করে। পরবর্তী সময়ে তা আউটপুট এর মধ্যে প্রদর্শন করা হয়। মূলত এই ধরনের বিশেষ ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র কে বলা হয়ে থাকে, কম্পিউটার।
কম্পিউটার এর নামকরণ হয় কিভাবে?
কম্পিউটার শব্দটি গ্রিক শব্দ কম্পিউট থেকে নেয়া হয়েছে। কম্পিউট শব্দের অর্থ হিসাব বা গননা। আর computer অর্থ হচ্ছে হিসেব বা গণনাকারী যন্ত্র। শুরুতে কম্পিউটার দিয়ে শুধু গননার কাজ করা হলেও বর্তমানে বহুবিধ কাজে মানুষের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন কাজে সক্ষম।
আরো দেখুনঃ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং
ডিজিটাল কম্পিউটার কি?
আমরা সচরাচর যে কম্পিউটার দেখি এটিই ডিজিটাল কম্পিউটার। ডিজিটাল শব্দের উত্তপ্তি ডিজিট থেকে যার অর্থ সংখ্যা।ডেটা প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটারে ব্যাবহার করা হয় বর্ণ ও অংক এবং প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল প্রদর্শিত হয় মনিটরে বা অন্য কোন আউটপুট ডিভাইসে। ডিজিটাল কম্পিউটার মূলত গণিতের নীতির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত একটি হিসাব যন্ত্র। এটি ‘০’ ও ‘১’ দিয়ে সব ধরনের কাজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে।
আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে? | Adhunik Computer Er Jonok
যদি এখন কোন ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হয় যে। বলুন তো কম্পিউটারের জনক কে। তাহলে সেই ব্যক্তি সাথে সাথেই এই প্রশ্নের উত্তরে বলবে যে। কম্পিউটারের জনক হল চার্লস ব্যাবেজ। কিন্তু আপনি যদি কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস আর একটু ঘেঁটে দেখেন। তাহলে জানতে পারবেন যে, প্রথম কম্পিউটারের আবিষ্কারক এর নাম হল হাওয়ার্ড আইকন। তবে google বলুন অথবা উইকিপিডিয়া বলুন। আপনি এ গুলোর মধ্যে এই ব্যক্তি সম্পর্কে তেমন খুব বেশি একটা জানতে পারবেন না।
এর পাশাপাশি বর্তমান সময়ে আমরা যে কম্পিউটার গুলো ব্যবহার করি। সেই কম্পিউটার এর সূচনা কিভাবে হয়েছিল। সে সম্পর্কেও সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে রয়েছে সন্দিহান। তবে এই সকল সন্দেহ কে দূর করার জন্য। বর্তমান সময়ে আমরা সবাই মনে করি যে। কম্পিউটারের জনক হলো, চার্লস ব্যাবেজ।
- আধুনিক কম্পিউটারের জনক হচ্ছেন চার্লস ব্যাবেজ।
কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?
আকার ও গতিক্ষমতা অনুসারে কম্পিউটার ৪প্রকার যথাঃ
- মেইনফ্রেম কম্পিউটার।
- মিনি কম্পিউটার।
- সুপার কম্পিউটার।
- মাইক্রো কম্পিউটার (পি,সি)।
কাজের ধরন অনুযায়ী কম্পিউটার ৩প্রকার যথাঃ
- ডিজিটাল কম্পিউটার।
- এনালগ কম্পিউটার।
- হাইব্রিড কম্পিউটার।
কম্পিউটারের মূল অংশ কয়টি?
আমরা সবাই বেশ ভালো করে জানি যে। একটি কম্পিউটার এর মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি সেই কম্পিউটার কে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য। অনেক সফটওয়্যার কে কাজে লাগানো হয়। তবে এখন যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় যে, কম্পিউটার এর মূল অংশ কয়টি। তাহলে কি আপনি সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন। আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে, আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন।
যারা বলতে পারবে না যে, কম্পিউটারের মূল অংশ কয়টি ও কি কি। তো তাদের উদ্দেশ্য করে আমি বলব যে। কম্পিউটারের মধ্যে আপনি মোট চারটি মূল অংশ দেখতে পারবেন। আর সেগুলো হলো, প্রসেসর, মেমোরি, ইনপুট এবং আউটপুট। মূলত এই চার টি অংশকে কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল অংশ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে?
কম্পিউটার মুলত এর দুটি অংশের মাধ্যমে কাজ করে থাকে হার্ডওয়্যার ও সফট ওয়ার। এর আবার দুটি অংশ থাকে ইনপুট ডিভাইস আউটপুট ডিভাইস। ইনপুট ডিভাইস এর মাধ্যমে প্রদানকৃত তথ্য বা ডেটা হার্ডওয়্যার ও সফট ওয়্যার এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে, আউটপুট এ ফলাফল প্রদশর্নে করে। আধুনিক কম্পিউটারের জনক চার্লস ব্যাবেজ এর কম্পিউটার আবিস্কার এর পর এর ব্যাবহার দিন দিন বেড়েই চলছে।যুগ যত পরিবর্তন হচ্ছে এর চাহিদা ততই বাড়ছে।
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যাবহার হয়?
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যাবহার হয় এর চাইতে বেশি সহজ হয় কম্পিউটার কি কাজে ব্যাবহার হয় না এর উত্তর দেয়া। আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে? (চার্লস ব্যাবেজ) এর কম্পিউটার আবিষ্কার করার পর এর ব্যাবহার বেরেই চলেছে। নিচে এর কিছু ব্যাবহার দেয়া হলোঃ
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার-
- ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখা-লেখির জন্য।
- অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থা।
- চিকিৎসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে।
- গবেষণা মুলক কাজে।
- একস্থান থেকে অন্যস্থানে সংবাদ প্রেরণের জন্য।
- বিনোদনের জন্য যেমন ,টিভি দেখা, ভিডিও দেখা, গান বাজানো, উপস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যাবহার হয়।
- যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এর জন্য।
- শিল্পক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের কাজে।
- মুদ্রণশিল্পে প্রকাশনার কাজে।
- আধুনিক সামরিক বাহিনীতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কম্পিউটার ব্যাবহার হয়।
- ব্যাংকিংয়ের কাজে।
- ব্যবসায়-বাণিজ্যের কাজে।
- কল-কারখানার কাজে।
- প্রকাশনার কাজে।
- সংবাদপত্র।
- টেলি কমিউনিকেশনের কাজে।
- চিকিৎসাবিজ্ঞানে।
- মহাকাশ গবেষণার কাজে।
- বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ।
- শিক্ষার কাজে।
- আবহাওয়ার কাজে।
আরো দেখুনঃ
কম্পিউটার আবিষ্কার এর ইতিহাস
বহুকাল পুর্বে গননার জন্য ঝিনুক, নুরি, দরির গিট ব্যাবহার করা হত। কিন্তু এতেও অনেক সময় ভুল হয়ে যেত। সেই সমস্যা সমাধান এর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আবিস্কার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তৈরি করা হয় অ্যাবাকাস নামক গননা যন্ত্র। একেই ইতিহাসের প্রথম গননা যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এর আবিস্কার হয় ব্যাবিলনে। (খ্রিস্টপূর্ব ২৪০০সালে) পরবর্তীতে এর উপর ভিত্তি করে ক্যালকুলেটর আবিস্কার হয়।
এরপরে উনিশ শতকের শুরুর দিকে আধুনিক একটি যন্ত্রের নির্মাণ ও ব্যবহারের ধারণা করে বিশেষজ্ঞ রা (যা কেবলমাত্র যান্ত্রিকভাবে, গাণিতিক হিসাব করতে পারে) প্রথমে সোচ্চার ভাবে প্রচার করেন স্যার চার্লস ব্যাবেজ। তিনি এর নাম দেন (Difference Engine)। এই ডিফারেন্স ইঞ্জিন নিয়ে যখন কাজ করছিলেন তখন তিনি (১৮৩৩ সালে) তিনি অ্যানালিটিক্যাল যন্ত্র নামে একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অর্থের অভা ছিলো তাই তিনি তার কাজ তিনি শেষ করতে পারেননি।
কম্পিউটার এর সত্যিকার বিকাশ ঘটতে শুরু করে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের ফলে(১৯৭১সালে) তারপর এর দ্রুত বিকাশ ঘটতে থাকে। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত আছে বিভিন্ন প্রকৃতি ও আকারের কম মূল্যের অনেক রকম (Personal Computer) বা পিসি (PC)। সে সঙ্গে উদ্ভাবিত হয়েছে অনেক রকম ব্যাবহার এর সাথে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে কম্পিউটার ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক এর এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সেবা ও পরিসেবার।
কম্পিউটার শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অসংখ্য প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠান। বর্তমান কালে (Information Technology) বা আইটি (IT) ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরাট অংশ দখল করে রয়েছে।ইন্টেল কর্পোরেশন ১৯৭১ সালে উদ্ভাবন করে। এর পর থেকে বাজারে আসতে শুরু করে মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক কম্পিউটার। তখন থেকে কম্পিউটারের আকৃতি ও কার্যক্ষমতায় এক বিরাট বিপ্লব ঘটে। আই বি এম এর পিসি বা পার্সোনাল কম্পিউটার বাজারে আসে ১৯৮১সালে।
আরো দেখুনঃ প্রসেসর এর কাজ কি?
এর পর একের পর এক উদ্ভাবিত হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর এবং তৈরি হতে হচ্ছে শক্তিশালী pc আই.বি.এম কোম্পানি প্রথম থেকে (IBM compatible computer) তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ না রাখায় এ ধরনের কম্পিউটারগুলির মূল্য ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে এবং এর ব্যবহারও ক্রমাগত হারে বাড়ছে। একই সময় আই.বি.এম কোম্পানির পাশাপাশি (Apple Computer Inc) তাদের উদ্ভাবিত (Apple-Macintosh) কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে।
কিন্তু কোম্পানিটি তাদের কমপ্যাটিবল কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে কোনোরূপ উদারতা প্রদর্শন না করায় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের মূল্য থেকে যায় অত্যধিক বেশি, যার ফলে এটি তেমন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে নি।
লিখে আসলে এর ব্যাবহার শেষ করা সম্ভব নয়। কম্পিউটার ছাড়া বিশ্ব এখন অচল। (আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে?)