পরিসীমা কাকে বলে? | পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র
পরিসীমা কাকে বলে? | ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র
পরিসীমা বলতে সাধারণত যা বুঝায় তা হচ্ছে, কোনো কিছুর (ত্রিভুজ, রম্বস, সামন্তরিক, বর্গ) সীমারেখার পরিমাপ করে যোগফল বের করাকে বুঝায়।
মনেকরি, একটি ত্রিভুজের তিনটি বাহু যথাক্রমে ৯.৫.৬ মিটার, তবে এর পরিসীমা হবে = (৯ + ৫ + ৬) = ২০
পরিসীমা কি?
যে কোন আকৃতির বর্গক্ষেত্র বা ত্রিভুজের রেখাংশের যোগফলকে পরিসীমা বলে।
পরিসীমা কাকে বলে?
বহুভুজের চারপাশের রেখাংশের মোট পরিমাণকে ঐ বহুভুজের পরিসীমা বলে।
পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র
ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:
তিন কোণের সমষ্টিকে ত্রিভুজ বলে।
মনেকরি,
একটি ত্রিভুজ ABC এর বাহু AB = a, বাহু BC = b বাহু AC C.
সুতরাং, ABC ত্রিভুজের পরিসীমা = (a + b + c)cm
উদাহরণ : ত্রিভুজের একটি বাহুর দৈর্ঘ্য ১৫ সেমি. অপর বাহুর
দৈর্ঘ্য ২০ এবং সর্বশেষ বাহুর দৈর্ঘ্য ২৫ সেমি, তাহলে এর পরিসীমা হবে।
ABC ত্রিভুজের পরিসীমা = (১৫ + ২০ + ২৫) সেমি.
বা, পরিসীমা = ৬০ সেমি,
আরো দেখুনঃ
বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:
যে আয়তের প্রতিটি বাহুই সমান থাকে, তাকে বর্গ বলে। বর্গের প্রতিটি কোণ সমকোণ।
বর্গের পরিসীমা = a + a + a + a = 4a
বর্গের চারটি বাহুই যেহেতু একই তাই এর পরিসীমা হবে,
ধরি,
বর্গের একটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৫ সেমি, তাহলে
ABCD বর্গের পরিসীমা হবে = (৫ + ৫ + ৫ + ৫) সেমি
বা, পরিসীমা = ২০ সেমি,
সামন্তরিকেবর পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:
যে বর্গের একটি বাহুও সমান না তাকে সামন্তরিক বলে।
সামন্তরিকের পরিসীমা = ২ (অসমান বাহুগুলোর যোগফল)
বা, পরিসীমা = ২ (a + b + c + d) উদাহরণ :
ধরি,
ABCD সামন্তরিকের একটি বাহু a = ৫ সেমি., b = ৬ সেমি., c = ৭ সেমি., d = ৮ সেমি.
তাহলে ABCD সামন্তরিকের পরিসীমা হবে = (৫ + ৬ + ৭ + ৮)
সুতরাং পরিসীমা = ২ (৫ + ৬ + ৭ + ৮ সেমি. = ১৩ সেমি.
ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:
একটি চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান্তরাল কিন্তু তা সমান নয় তাকে ট্রাপিজিয়াম বলে।
যেহেতু ট্রাপিজিয়ামের কোন বাহুই সমান নয় তাই এর পরিসীমা হবে এর প্রতিটি বাহুর যোগফল।
ABCD ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমার সূত্র = a + b + c + d
ABCD ট্রাপিজিয়ামের একটি বাহুর দৈর্ঘ্য a = ১০ সেমি. b = ১১ সেমি., c = ১৫ সেমি, ও d = ২০ সেমি.।
সুতরাং ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা = (১০ + ১১ + ১৫ + ২০) = ৫৫ সেমি.
আরো দেখুনঃ ভগ্নাংশ কাকে বলে?
রম্বসের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:
আমরা জানি, যে সামন্তরিকের প্রত্যেকটি বাহুই সমান তাকে বলা হয় রম্বসা
যেহেতু একটি রম্বসের প্রতিটি বাহুই সমান তাই এর প্রতিটি বাহুই হবে a
সুতরাং রম্বসের পরিসীমা = a + a+ a + a =4a
উদাহরণ : যেহেতু রম্বসের প্রতিটি বাহুই সমান তাই এর একটি বাহু সমান সমান = ৪ সেমি. ধরে পরিসীমা হবে…
8 রম্বসের পরিসীমা = ৪ সেমি. + ৪ সেমি. + ৪ সেমি.+ ৪ সেমি. = ১৬ সেমি.
আয়তক্ষেত্রের পরিসীমার সূত্র:
আয়তক্ষেত্রের বাহুগুলোর সমষ্টিই হচ্ছে এর পরিসীমা। আয়তক্ষেত্রের বিপরীত বাহুগুলো সমান হয়, তাই এর একজোড়া বাহুর দৈর্ঘ্যকে দ্বিগুণ করলেই এর পরিসীমা পাওয়া যাবে।
ধরি,
DEFG আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য DEFFG = d এবং প্রস্থ EF = DG = e.
অতএব, আয়তক্ষেত্রের পরিসীমা, Q হলে,
Q = (DE + FG + EF + DG)
Q = (d + d + e + e)
Q = (2d + 2e)
.. Q = 2 x (d+e)
অতএব, আয়তের পরিসীমার সূত্র হচ্ছে = ২ (দৈর্ঘ্য + প্রস্থ) সূত্র করি আমরা একটি উদাহরণ দেখি, ধরি একটি আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য = ২০ সেমি এবং প্রস্থ = ১৫ সেমি এখন এর পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্রটি প্রয়োগ করলে উত্তর হবে…
আয়তক্ষেত্রের পরিসীমা = ২ × (২০ + ১৫) সেমি
= ২ × ৩৫ সেমি
= ৭০ সেমি.।
পরিসমাপ্তি: পরিসীমা কাকে বলে তা আমরা জেনেছি। ভিন্ন ভিন্ন আকৃতির ত্রিভুজ বা চতুর্ভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র ভিন্ন ভিন্ন। পরিসীমা কাকে বলে এর মাধ্যমে আসলে কোন আকৃতির ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজের এর আবদ্ধ যোগফলকে বুঝায়। উপরোক্ত আর্টিকেলে পরিসীমা কাকে বলে সহ প্রত্যেকটির ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজের সংঙ্গা এবং পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র ও উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে খুব সহজ করে|