কোন পিল সবচেয়ে ভালো
কোন পিল সবচেয়ে ভালো | পিল খাওয়ার নিয়ম জানতে চাই | পিল খাওয়ার পরও কি প্রেগন্যান্ট হয়?
যাঁরা নতুন বিবাহ করেছেন তাদের অনেকে প্রশ্ন করে কোন পিল সবচেয়ে পিল? জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলের নাম ও দাম কেমন? কিন্তু তাঁর আগে তো জানতে হবে আসলে পিল কি জিনিস? পিল হল মূলত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল যা গর্ভাবস্থা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এগুলোতে সিন্থেটিক হরমোন রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বাজারে পাওয়া যায়। প্রত্যকের পিলের আলাদা আলাদা স্বাস্থ্য গুণ ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে সাধারণত প্রোজেস্টিন ও ইস্ট্রোজেন এর সংমিশ্রণ থাকে। আজকের এই আর্টিকেল পড়লে জানতে পারবেন কোন পিল সবচেয়ে ভালো? পিল খাওয়ার নিয়ম এবং দাম ইত্যাদি বিষয়গুলো জানতে পারবেন। তাছাড়া আপনি চাইলে একজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর সাথে কথা বলতে পারেন।
আরো দেখুনঃ গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণ.
কোন পিল সবচেয়ে ভালো | জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের নাম ও দাম
জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কনডমের পাশাপাশি পিলও খাওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে মার্কেটে যেহেতু বিভিন্ন কোম্পানির পিল পাওয়া যায়। সেহেতু আপনাকে আগে বাছাই করে নিতে হবে কোন পিল সবচেয়ে ভালো? কোনটার কার্যকারিতা বেশি। এসব কিছু চিন্তা করেই তারপর পিল কিনতে এবং খেতে হবে। চলুন জেনে নেই-
নরেট ২৮:
নরেট ২৮ হল জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হল পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। মূলত মাসিক শুরু হওয়ার ২য় দিন থেকে শুরু করে যতদিন বাচ্চা না নিতে চান, ততদিন পর্যন্ত খেতে হবে। প্রতিদিন অবশ্যই একটা করে খেতে হবে। প্রতি পিস নরেট ২৮ এর দাম হল ২৩.৪২ টাকা। যেকোন ফার্মেসির দোকানে সচারাচর পেয়ে পাবেন।
ফেমিকন:
ফেমিকন হল বাংলাদেশর সবচেয়ে পরিচিত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল। তাই সবাই এই পিলের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানে। উপরের দিকে ফেমিকন পিল সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। তবে এই পিল খেলে খিঁচুনি, অস্বস্তি বন্ধ হয়ে যাবে। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হল সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি। প্রতিটি পিসের দাম ২৭.৪৪ টাকা।
কনরেনা আর পিল:
জন্মনিয়ন্ত্রণ এর জন্য জনপ্রিয় পিল কনরেনা আর পিল। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হল রেনাটা লিমিটেড। প্রতি পিসের দাম ১৫ টাকা। আপনার পাশেপাশের যেকোনো ফার্মেসিতে খোঁজ করলে পেয়ে যাবেন।
মারভেলন পিল:
মারভেলন পিল হল মুখে খাওয়া জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের সবচেয়ে কার্যকারী পিল। নুভিস্তা ফার্মাসিটিক্যালস এই পিল বাজারজাত করে থাকে। মোট ২১ টি পিল থাকে। প্রথমদিকে সেবনের ফলে বমি বমি ভাব, শরীর দূর্বল বা ওজন কমে যেতে পারে। এটা নিয়ে ভয়ের কোন কারণ নেই। কয়েকমাস সেবনের পর এমনি ঠিক হয়ে যাবে। মারভেলন পিল এর দাম প্রায় ৬০ টাকা।
বর্তমানে এই পিলগুলো সবচেয়ে ভালো। তাই আপনি নিশ্চিতে যেকোনো একটি প্রতিনিয়ত সেবন করতে পারেন। তাছাড়া যেকোনো ডাক্তার এর সাথে কথা বলে তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী পিল কিনতে পারেন।
পিল খাওয়ার নিয়ম জানতে চাই
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল মূলত খাওয়া হয় অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভাবস্থা প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে। অনেক নারী কনডম ছাড়া যৌন মিলন করতে পছন্দ করে। এজন্য তাঁরা নিয়মিত পিল খেয়ে থাকে। তার আগে আপনাকেও জানতে পাবে কোন পিল সবচেয়ে ভালো? সেই অনুযায়ী মিলনের ৭২ থেকে ১২০ ঘন্টার মধ্যে পিল খাওয়া উত্তম। এতে গর্ভবস্থা হওয়ার সম্ভবনা থাকে না। এক গবেষণা দেখা গেছে, প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে মাত্র ২ জন নারী গর্ভধারণ করেছে। তাই চিন্তার তেমন কোন কারণ নেই। চলুন পিল খাওয়ার নিয়মগুলো জেনে নিই-
ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম Emergency Pill
ইমারজেন্সি পিল মিলনের সাথে সাথে যে খেতে হবে এমন কোন কথা নেই। মিলনের ৭২ ঘন্টা থেকে ১২০ ঘন্টার মধ্যে আপনি যখন মন চাইবে তখন খেতে পারবেন। তবে বেশি দেরি করে খাবেন, তাহলে পিলের কার্যকারিতা কাজ করবে না। ইমারজেন্সি পিল খেলে পিরিয়ড এর সার্কেল অনিয়মিত হয়ে যায়। মাথা ঘোরা, বমি, পেটে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই পিল খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে না।
ফেমিকন পিল খাওয়ার নিয়ম:
আমাদের দেশে সবচেয়ে পরিচিত পিল হল ফেমিকন পিল। এখানে মোট ২৮ টা পিল থাকে। যার মধ্যে ২১ টা সাদা পিল এবং ৭ টা লাল পিল। মূলত সাদা পিল খেতে হবে পিরিয়ড শুরু হওয়ার ১ম দিন বা ২য় দিন থেকে। এভাবে ২১ টা পিল ২১ দিন খেতে হবে। এরপর লাল পিল গুলো পরপর ৭ দিন খেতে হবে। এভাবে সহজে গর্ভধারণ রোধ করা যায়। একদিন যদি কোন কারণে পিল খেতে ভুলে যান, তাহলে তার পরদিন দুটো পিল একসাথে খেয়ে নিবেন। তবে আপনি যদি ভবিষ্যতে কোন সময় সন্তান নিতে চান, তাহলে ফেমিকন পিল খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
মিনিপিল খাওয়ার নিয়ম:
মিনিপিল মূলত প্রজেস্টেরেন দিয়ে তৈরি জন্মবিরতিকরণ খাবার পিল। তবে এই প্রায় শতকরা ৯৭-৯৮ ভাগ কাজ করে। মিনিপিল প্রতিদিন একটা করে একই সময়ে খেতে হবে। মাসিক শুরু হওয়ার ৫ দিনের মধ্যে খাওয়া শুরু করতে হবে। যাদের বাচ্চা হয়েছে তাঁরা বাচ্চা জন্মের ৬ সপ্তাহ পর থেকে খাওয়া শুরু করতে পারেন মিনিপিল।
এছাড়া আমাদের দেশে আরো অনেক পিল পাওয়া যায়। যার মধ্যে নরেট, কনরেনা আর পিল, মারভেলন ইত্যাদি ব্রান্ডের পিল। তবে অধিকাংশ পিল খাওয়ার নিয়ম একই। ইমারজেন্সি দরকার হলে তাড়াতাড়ি খেতে হবে। আর একমাসে চক্র হলে তাহলে ২১ বা ২৮ দিন পিল খেতে হবে।
আরো দেখুনঃ গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ.
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ
সাধারণত পিল খাওয়া হয় গর্ভধারণ প্রতিরোধ এর জন্য। কিন্তু পিল খাওয়ানোর পরও সঠিক সময়ে মাসিক হয় না। এক্ষেত্রে অনেকে ধরনের চিন্তা মাথায় মধ্যে কাজ করে। যেহেতু মেয়েদের একটা সার্কেল অনুয়ায়ী প্রতি মাসে মাসিক হয়। তাই পিল খাওয়ার পর যদি মাসিক না হয় অবশ্যই প্রেগনেন্সি টেস্ট করাবেন। গর্ভবতী হলে মূলত মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য আগে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে হবে যদি দেখেন নেগেটিভ আসছে তখন অবশ্যই ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে আবার মাসিক হওয়া শুরু করবে। তাই এমন হলে চিন্তা না করে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং সুস্থ থাকুন।
পিল খাওয়ার পরও কি প্রেগন্যান্ট হয়?
পিল খাওয়ার পরও আপনি গর্ভবতী হতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে কিছু কারণ থাকে। গবেষনায় দেখা গেছে পিল খাওয়ার ফলে প্রায় ৯ শতাংশ গর্ভধারণ হয়েছে। চলুন জেনে নিই কারণগুলো-
- প্রতিদিন আপনি যদি পিল সেবন না করেন তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারন প্রতিরোধ করা সম্ভব না। কারণ ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টিন হরমোনের সমন্বয়ে অধিকাংশ পিল কাজ করে। এজন্য নিয়মিত না খেলে হরমোনের ঘাটতি দেখা দেয় এবং মিলনের পর গর্ভবতী হয়ে যায়।
- হার্বাল সাপ্লিমেন্টের জন্য গর্ভনিরোধক পিল ঠিক মতো কাজ করে না। সাথে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
- আপনি পিল খান কিন্তু প্রতিদিন সঠিক সময়ে সেবন করেন না। কারণ গর্ভধারণ প্রতিরোধ করতে হবে সঠিক সময়ে পিল খেতে হবে, এতে হরমোনের মাত্রা কমে যাবে না। মূলত পিল কাজ করে হরমোনের ওপর নির্ভর করে।
পিল খাওয়ার কতদিন পর সহবাস করা যায়
পিল খাওয়া হল জন্মনিয়ন্ত্রণ এর জন্য। তাই পিল খাওয়ার সাথে সাথে সহবাস করা যাবে না। কারণ পিল কাজ করতে একটু সময় তো লাগবে। তাই তাড়াহুড়ো করবেন না। সেসময় যদি খুব যৌন উত্তেজনা হয় তাহলে হস্তমৈথুন করে ফেলুন। পিল খাওয়ার পর ৭২ ঘন্টা পর আপনি চাইলে আবার সহবাস করতে পারেন। এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। অতিরিক্ত কোন পিল খাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
আরো দেখুনঃ সহবাসের কতদিন পর গর্ভবতী হয়.
কোন পিল সবচেয়ে ভালো FAQ
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কোনটি ভালো?
ফেমিকন পিল, মিনিপিল, ইমারজেন্সি পিল। মূলত বাজারের অধিকাংশ পিল ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরেন দুটি হরমোনের সংমিশ্রণে তৈরি। গর্ভধারণ প্রতিরোধ করতে এগুলো প্রায় ৯৯ দশকিম ৯ শতাংশ সফল।
- ৭২ ঘন্টা পিল এর নাম কি?
৭২ ঘন্টা পিলের অন্য নাম হল মর্নিং আফটার পিল। অনিরাপদ মিলন করলে মিলেনর পরপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেতে হবে। তাহলে এটি ভাল কাজ করবে।
- হঠাৎ পিল খাওয়া বন্ধ করলে কি হয়?
অতিরিক্ত পিরিয়ড হতে পারে সাথে তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা হতে পারে। তাছাড়া অনেকে মেয়েদের শরীরের ওজন কমতে পারে, আবার অনেকের ওজন বাড়াতে পারে। কারণ খাদ্যভাসের পরিবর্তন এর জন্য এমনটা হয়ে থাকে।
- রোজেন ২৮ কি?
মূলত রোজেন ২৮ হল জন্মবিরতিকরণ পিল। এই পিল জন্মনিয়ন্ত্রণ বিরতিতে বেশ কার্যকর। আশেপাশে যেকোনো ফার্মেসিতে খোঁজ করলে পেয়ে যাবেন।
- রোজেন ২৮ খেলে কখন পিরিয়ড হয়?
রোজেন ২৮ মোট ২৮ টা পিল থাকে। ২১ টা পিল প্রথম খাওয়া শেষ করতে হবে। এরপর যদি আপনি লাল রঙের পিল গুলো খাওয়া শুরু করেন তাহলে পিরিয়ড শুরু হবে।
- ১৫ দিন পরপর মাসিক হওয়ার কারণ কি?
মূলত অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, অতিরিক্ত কফি পান করা, অপরিষ্কার থাকা, ধূমপান করা ইত্যাদি কারণে হয়। অনিয়মিত মাসিক হওয়ার অত্যতম কারণ হল হরমোন।
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেলে কি স্তন বড় হয়ে যায়?
পিল গ্রহণ করলে আপনার শরীরে হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এই কারণে আপনার শরীরের পরিবর্তন আসতে শুরু করে যেমন স্তন বড় হয়ে যাওয়া, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি।
- সকালে বা রাতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়া ভালো?
আপনি যদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করেন যাতে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টিন হরমোন থাকে। তাই আপনি চাইলে দিনে বা রাতে যেকোনো সময় খেতে পারেন। তবে প্রতিদিন একই সময়ে পিল খেতে হবে, তা নাহলে ঠিকমতো কাজ করবে না।
- Feminor 5 মিলিগ্রাম এর কাজ কি?
Feminor৷ Tablet যা মূলত গর্ভধারণ প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
- সবচেয়ে সাধারণ জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কি?
সবচেয়ে সাধারণ জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল হল কম্বিনেশন পিল।
সর্বশেষ কথা: আশা করি আমাদের আজকের পোস্টটি পড়ে কোন পিল সবচেয়ে ভালো? পিল খাওয়ার নিয়ম এবং দাম ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি এ’বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। তাছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলগুলো পাশ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে এবং কিছুটা স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই কোন সমস্যা হলে একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।