বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি?
বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি | শবে বরাতের নামাজ কি সুন্নত নাকি নফল
বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত ইসলামি ক্যালেন্ডারের ৮ম মাস। শবে বরাত হল শাবান মাসে। এটি ১৫ই শাবানের রাত যখন মুসলিমরা নামায ও দোয়ার মাধ্যমে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রশংসায় একত্রিত হন। ইসলামি ক্যালেন্ডারের চন্দ্র মাসের অন্যতম একটি রাত হলো এই শবে বরাত। এই শবে বরাতের নামায হলো নফল নামায। ফরজ আর সুন্নত নামাযের আদায়ের পর সকল প্রকার নামায হলো নফল।
আমরা মুসলিমরা সবাই সাধারণত রাতের বিশেষ করে এশার নামাযের পর বেতের নামায আদায় করে থাকি। তারমানে সবশেষে আমরা বেতের নামায আদায় করি। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই বেতের নামাযের পর কোন প্রকার নফল নামায বা বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি? উত্তর হলো, হ্যাঁ পড়া যাবে। কারণ শবে বরাতের নামায হলো নফল নামায।
আল-নাওয়াবী আল-মাজমুত থেকে বর্ণিত (৩/৫/১২): “যদি কোন ব্যক্তি বিতরের নামায পড়ে তবে সে রাতে নফল সালাত পড়তে চায় তাহলে সে এটি পড়তে পারবে।”
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাও থেকে বর্ণিত হাদিসেও এর প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, প্রিয় নবী নফল নামাজের পরও বেতের নামাজ আদায় করেছেন।
আরো দেখুন:
শবে বরাতের নামাজ কি সুন্নত নাকি নফল
শবে বরাতের নামাজ উল খায়ের বা শবে বরাতের নামাজ নামেও পরিচিত। এটি মুসলিমদের জন্য আদায়কৃত বরকতময় নফল নামাজ। সাধারণত নিয়ম হলো সকল প্রকার নফল নামাজের শেষে বেতের নামাজ পড়া কিন্তু এর মানে এই নয় যে, বিতরের পর আর কোন নফল নামাজ পড়াই যাবে না। আগে নবী রাসূল এবং সাহাবীরা তাদের রাতের নামাজের পর বেতের নামাজ এই জন্য রেখে দিতেন যেন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে তারপর বেতের শেষে পড়তে পারেন।
বর্তমানেও অনেকেও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের জন্য বেতের রেখে দেন কিন্তু রাতে উঠতে না পারার কারণে এই নামাজটি কাযা হয়ে যায়। তাই আপনি যদি সন্দিহান থাকেন নিজেকে নিয়ে যে রাতে উঠতে পারবেন নাকি পারবেন না তাহলে বেতের পড়ে ফেলতে পারবেন এতে কোন সমস্যা নেই। তারপরও নফল নামাজ আদায় করতে পারবেন।
বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি?
বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি হ্যাঁ, বেতের নামাজারে পর শবে বরাতের নামাজ আদায় করতে পারবেন যেহেতু এটি নফল নামাজ। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা নামাজের শেষে বিতর আদায় কর। (আল-বুখারী, ১৯৮ দ্বারা বর্ণিত: মুসলিম, ৭৪) 90।
রাতের শেষভাগে বিতর পড়া উত্তম, তবে যে ব্যক্তি রাতের শুরুতে বিতরের নামাজ পড়ল সে উত্তম। বিতরের পরে নামায পড়া জায়েজ তবে বিতরের পুনরাবৃত্তি করা উচিত নয় নফলের পর।
বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি -FAQ
১. বেতের নামাজ কত রাকাত পড়া যায় ?
বিতর নামাজ তিন রাকাত। বিতর নামাজের প্রথম ২ রাকাত সাধারণ নামাজের নিয়মে পড়ে প্রথম বৈঠকে তাশাহুদ পড়ে সালাম না ফিরিয়ে তৃতীয় রাকাত পড়ে শেষে দোয়ায়ে কুনুত পড়ে তারপর বৈঠকে দুরূদ শরীফ পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।
২. বিতর সালাত কখন আদায় করতে হয়?
বিতর নামাজ এশার নামাজের পর ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত যে কোন সময় পড়া যায়। বিতর শব্দের অর্থ-বিজোড় কারণ এখানে দুই রাকাত নামাজের সাথে আরো ১ রাকাত আদায় করা হয়।
৩. নফল শব্দের অর্থ কি?
নফল শব্দের অর্থ অতিরিক্ত। ফরজ ও ওয়াজিবের পর যে অতিরিক্ত নামাজ পড়া হয় তাকে নফল বলা হয়৷ নফল নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ্র নৈকট্য লাভ হয়।
৪. কখন নফল নামাজ পড়া নিষেধ?
তিন সময় সকল প্রকার নামাজ পড়া সম্পূর্ণ নিষেধ। এই তিন সময় হলো: সূর্য যখন উঠে, সূর্য যখন খাড়াভাবে থাকে, এবং সূর্য যখন অস্ত যায়৷
৫. নফল নামাজ কখন পড়তে হয়?
নফল নামাজ নিষিদ্ধ সময় ছাড়া আপনি যে কোন সময় পড়তে পারবেন। নফল নামাজ পড়ার কোন নির্দিষ্ট সময় ও রাকাত নেই। আপনি আপনার মতো যত ইচ্ছা নফল নামাজ আদায় করতে পারবেন যে কোন সময়।
সমাপ্তি: বেতের নামাযের পর শবে বরাতের নামায পড়া যাবে কি? এই প্রশ্নের এক কথায় উত্তর হচ্ছে, “হ্যা” পড়া যাবে। কিন্তু উত্তম হলো বেতের নামাজের আগে সকল নফল নামাজ আদায় করে নেয়া কিন্তু পড়ে পড়লেও কোন অসুবিধা নেই।