কিটো ডায়েট খাবার তালিকা
কিটো ডায়েট খাবার তালিকা | কিটো ডায়েট চার্ট
আমাদের মাঝে অনেকেই আছি যারা দেহের চর্বি /মেদ বা ভুরি কমাতে চাই সাথে কমাতে চাই ওজনও। কারণ সুন্দর বডি ফিগার কে না চায়।আবার করতে চাইনা ব্যায়ামও।যদি খাবার কমিয়ে খাই তাহলে শরির দুর্বল হয়ে যায়। এ জন্য আমরা অনেকেই স্বাস্থ্য নিয়ে আছি মহা ঝামেলায়। এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে একটি ভরসার নাম হচ্ছে কিটো ডায়েট।
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট: শরীর কমানোর উপায়.
বর্তমানে বহুল পরিচিত ডায়েট হচ্ছে কিটো জেনিক ডায়েট বা কিটো ডায়েট। মুলত এর কার্যকরী গুনের জন্যই এটি প্রিয়।কিটো ডায়েটকে ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির এর ডায়েটও বলা হয়ে থাকে। কিটো ডায়েট বা কিটোজেনিক ডায়েট হচ্ছে এক ধরনের ডায়েট চার্ট যার মাধ্যমে স্বল্প সময় ও স্বল্প ব্যামে শুধুমাত্র খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করে ওজন বা মেদ কমানো সম্ভব।
আমাদের নরমাল ডায়েটে থাকে ৫০% কার্বোহাইড্রেট, এবং ৩০% ফ্যাট আর ২০%প্রোটিন থাকে। কিন্তু এই কিটোজেনিক ডায়েটে টোটাল ক্যালোরিক নিডের কার্বহাইডেট ৫%, প্রোটিন ২৫% আর ফ্যাট থাকে ৭০%। এর মানে হচ্ছে আপনি সারাদিন যতটা খাবার খাবেন তার মধ্যে খাবারের পার্সেন্টেজ হবে এমন। এ জন্য আপনাকে খাবার এর গুন সম্পর্কে জানতে হবে আরও জানতে হবে কোন কোন খাবারে কী পরিমাণ কার্ব, প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি থাকে।
কিটো ডায়েট খাবার তালিকা (যেসব খাবার খাওয়া যাবে না)তা দেখে নিইঃ চালের তৈরি খাবার যেমন ভাত,পিঠা ইত্যাদি গমের তৈরি খাবার যেমন রুটি,পাউরুটি,পরোটা,বিস্কুট ইত্যাদি যে কোনো প্রকার ডাল যথা মুশুর ডাল,বুটের ডাল,মাসকলাই এর ডাউল ইত্যাদি যে কোনো প্রকার আলু ও আলুর তৈরি খাবার যথা মিস্টি আলু,গোল আলু,চিপস,ইত্যাদি চিনি,দুধ বা দুধ এর তৈরি খাবার পল্ট্রি,গরুর মাংশ ইত্যাদি
কিটো ডায়েট খাবার তালিকা (যেসব খাবার খাওয়া যাবে): সবুজ শাক সবজি সামুদ্রিক মাছ মুরগি(তবে বাড়িতে পালন করা যেগুলোকে বড় করতে ফিড খাওয়ানো হয় না) টক জাতীয় ফল গরু বা খাসির পায়া(অল্প পরিমান) ঘি বা বাটার (শপ থেকে কেনার চাইতে বাড়িতে বানানো গুলা উত্তম) বাদাম চা বা কফি তবে চিনি ছাড়া।
কিটো ডায়েট চার্ট | Keto Diet Chart
সকালে ৮টার দিকে ১কাপ চা বা কফি চিনি ছাড়া। চা খেলে সাথে আদা লবংগ যোগ করতে পারেন অথবা আপেল সিডাক ভিনেগার অথবা লেবু চিপে কুসুম গরম পানিতে দিয়ে খেতে পারেন দুপুরে দুপুরের খাবারের আগে অবশ্যই লেবু পানি অথবা আপেল সিডাক ভিনেগার খেয়ে নিবেন এতে আপনার বাড়তি মেদ ঝড়ে যাবে। তারপর সবুজ সবজি,মাছ,মাংশ খেতে পারেন তবে মাছ মাংশ খেলে ১পিস এর বেশি নয়।
অবশ্যই ঘি বা বাটারে অথবা এক্সট্রা ভার্জিন ওয়েল এ ভাজা হতে হবে অথবা ঘিয়ে ভাজা বাদামও খেতে পারেন।আর সাথে অবশ্যই সালাদ রাখতে হবে।আপনি চাইলে ডিম খেতে পারেন কারণ কিটো ডায়েট এর ক্ষেত্রে দিন ৬টা ডিম খাওয়া যায়।কারন ডিম প্রোটিন যোগায়। বিকালের খাবার বিকালে খুধা পেলে আপনি সকালের অনুরূপ খাবার খেতে পারেন।
রাতের খাবার রাতের খাবার হবে দুপুরের অনুরূপ তবে দু একটি আইটেম কম বেশি হতে পারে। রাতে আটটার আগে খাওয়া শেস করুন।এরপর পানি ছাড়া কিছুই খাবেন না।আর রাত ১০টার মাঝে ঘুমাতে হবে।
যাদের বয়স ২৬বা তার বেশি তারা ১২০০ ক্যালোরিরকিটো ডায়েট চার্টটি করতে পারেন:
১২০০ক্যালোরি কিটো ডায়েট চার্ট ঘুম ভাঙার পর(সকালে): এক কাপ লেবু চা + ২টি বিস্কিট ( চিনি মুক্ত ) – ৯০ ক্যালোরি ব্রেকফাস্ট: সেদ্ধ ডিম ২টি + ২ স্লাইস ব্রাউন ব্রেড (২৯০ ক্যালোরি) / সেদ্ধ ডিম + ১ স্লাইস ব্রাউন ব্রেড + হাফ কাপ মাঠা (৩১০ ক্যালোরি) বেলা ১১টা – ১২টা: ১টি কলা / ১৫-২০ টি আঙ্গুর ফল (৫০ ক্যালোরি) দুপুর : ব্রাউন রাইস ১ কাপ+ মুরগি ১০০ গ্রাম (দেশি মুরগি ঝোল ছাড়া) + ১/২ কাপ মিক্সড সবজি+ সালাদ ১ বাটি (৩৬০ ক্যালোরি) সন্ধ্যা: বাটার মিল্ক নিবেন ১ কাপ ৩৫ ক্যালোরি ডিনার: একটা লাল আটার রুটি খেতে পারেন + এক টুকরো মাছ (৫০ গ্রাম)+ আধা কাপ ডাল + ছোট এক বাটি রায়তা (৩৮০ ক্যালোরি)।
কিটো ডায়েট রেসিপি
কিটো ডায়েট এ যেসব খাবার ইউজ করবেন তা অবশ্যই হতে হবে ঘি বা বাটারে ভাজা অথবা সেদ্ধ আর রান্নায় ব্যাবহার করতে হবে এক্সট্রা ভার্জিন ওয়েল।
এবার অনেকের মনে প্রশ্ন আসবে কিটো ডায়েট কতদিন করা যায়?
কিটো ডায়েট বা কিটোজেনিক ডায়েট ৭-১০ দিন এমনকি ১৫ দিন পর্যন্ত চালানো যায়। তবে জীবনভর চালানো যায় না। এই ডায়েটে ব্যাবহৃত অতিরিক্ত প্রোটিন একদিকে যেমন ব্যয়বহুল, অন্যদিকে এটা কিডনির ওপর চাপ ফেলে এবং রক্তের চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং ওজন কমাতে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কবলে না পড়াই ভালো। তবে ১৫দিন পর ৩-৪দিন বাদ রেখে আবার শুরু করতে পারেন এই ডায়েট।
সতর্কতা: যারা শারিরীক ভাবে সুস্থ তারাই শুধুমাত্র এই ডায়েট চার্টটি ফলো করতে পারেন নয়তো বা দরকার নেই। কিটো ডায়েট খাবার তালিকা কনটেন্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
কিটো ডায়েট খাবার তালিকা FAQ
১. কিটো ডায়েটে কি কি খাবার খাওয়া উচিত?
কিটো ডায়েটে আপনি যে খাবারগুলি খেতে পারেন তার মধ্যে রয়েছে মাছ এবং সামুদ্রিক খাবার, মাংস এবং হাঁস-মুরগি, নন-স্টার্চি শাকসবজি যেমন বেল মরিচ, ব্রোকলি, অ্যাভোকাডোস, বেরি, বাদাম এবং বীজ, ডিম, উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, অলিভ অয়েল এবং অন্যান্য তেল, এবং উচ্চ-কোকো চকোলেট।
২. শীর্ষ ১০ কিটো খাবার কি কি?
কেটোজেনিক ডায়েটের জন্য শীর্ষ ১০টি খাবার
- জলপাই এবং জলপাই তেল।
- মাংস, পোল্ট্রি, এবং সামুদ্রিক মাছ।.
- উচ্চ ফ্যাট ডেইরি (পনির, মাখন এবং ক্রিম)।
- ডার্ক চকলেট।
- বেরি।
- রসুন, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য শাকসবজি।
- নারকেল তেল।
- বাদাম এবং বীজ। বাদাম এবং বীজ যে কোনও ডায়েটে একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন।
৩. কিটো ডায়েটে কী খাবেন না?
- শস্য জাতীয় খাবার।
- স্টার্চি শাকসবজি এবং উচ্চ চিনিযুক্ত ফল।
- মিষ্টি দই।
- রস।
- মধু, সিরাপ বা চিনি যেকোনো রূপে।
- চিপস এবং ক্র্যাকার।
- বেকড পণ্য।
৪. আমি কি কিটোতে ভাত খেতে পারি?
না, সাদা চাল কেটো ডায়েটের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। যেহেতু কেটোজেনিক ডায়েট নাটকীয়ভাবে নেট কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ প্রতিদিন গড়ে ২০ গ্রাম কমিয়ে দেয়, তাই ভাত কেটো-বান্ধব নয় কারণ ভাতে অনেক বেশি কার্বোহাইড্রেট রয়েছে।
৫. আমি কি কিটোতে দুধ পান করতে পারি?
দুধ কেটো-বান্ধব নয় কারণ এতে ল্যাকটোজ আকারে উচ্চ পরিমাণে চিনি থাকে। দুধ কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাদ্যের সাথে মানানসই হতে পারে।
৬. কিটোতে কোন ফল এড়ানো উচিত?
যে সকল ফল আপনার কিটোতে এড়িয়ে চলা উচিত তার মধ্যে রয়েছে:
- আপেল।
- আঙ্গুর।
- কলা।
- আম।
- পীচ ফল।
- আনারস।
- কিসমিস।
৭. কলা কি কিটো?
না কলা কিটো-বান্ধব ফল নয় কারণ কলায় কার্বোহাইড্রেট খুব বেশি থাকে যার ফলে ওজন কমার ফলে বেড়ে যাবে।
৮. কিটোর প্রধান নিয়ম কি?
একটি কেটোজেনিক ডায়েটে প্রতিদিন প্রায় ৬০-৮০% চর্বি, ১০-৩০% প্রোটিন এবং ৫-১০% – বা ২০-৫০ গ্রাম – কার্বোহাইড্রেটের বেশি হওয়া উচিত নয়। উচ্চ চর্বিযুক্ত, কম কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন: ডিম, মাংস, দুগ্ধজাত খাবার এবং কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত শাকসবজি, সেইসাথে চিনি-মুক্ত পানীয়গুলি রাখা খাবারের তালিকায়। উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ট্রান্স ফ্যাট সীমিত করতে হবে এই কিটো তালিকা থেকে।