কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব | কোর্ট ম্যারেজ করতে কত টাকা লাগে
Court marriage কি সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোর্ট ম্যারেজ হলো। পরিবারের কোনো প্রকার অনুমতি না নিয়ে, আইনগত ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। তাকে বলা হয়ে থাকে, কোর্ট ম্যারেজ। তবে কোর্ট ম্যারেজ বলতে আইনের মধ্যে এমন কোন কিছুই নেই। আর কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য নন জুডিশিয়াল স্টাম্প এর প্রয়োজন হয়ে থাকে। যে স্টাম্প গুলো কিনতে ৫০ টাকা এবং ১০০ টাকা দিয়ে কিনে নিতে হবে।
কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব আপনি কি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে শুনুন, কোর্ট ম্যারেজ করাটা আসলে ভালো নয়। কেননা এখানে একজন ছেলে এবং একজন মেয়ে পরিবারের অনুমতি ছাড়াই বিয়ে করছে। এবং আইনগত ভাবে কোর্ট ম্যারেজ বলতে আসলে কিছুই নেই। তবে আইনি কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ করার ফলে। একসাথে বসবাস করার বৈধতা প্রদান করে।
আরো দেখুনঃ জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড.
কিন্তু আপনার যদি একান্তই জানার প্রয়োজন হয় যে, কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব। তাহলে নিচের আলোচনায় নজর রাখুন।
কোর্ট ম্যারেজ কি?
এক কথায় বলতে গেলে কোর্ট ম্যারেজ হল মানুষের মুখের একটি ব্যবহৃত শব্দ। এবং এই শব্দের অর্থ হলো কোর্ট ম্যারেজ করলে হলফনামার মাধ্যমে স্বামী এবং স্ত্রীর বৈধতা ঘোষণা করা হয়। যাকে বলা হয়ে থাকে, কোর্ট ম্যারেজ। আর এই ধরনের হলফনামা গুলো কিনতে হলে ২০০ টাকা এর মত প্রয়োজন হয়।
এবং কোর্ট ম্যারেজ এর এই হলফনামা গুলো নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প লিখে। লটারি পাবলিক এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। অথবা প্রয়োজন অনুসারে, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এর মাধ্যমে। এই কোর্ট ম্যারেজের যাবতীয় কার্যাবলী গুলো সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।
আর যখন বিবাহের জন্য কোর্ট ম্যারেজ করানো হয়। তখন পরিবারের লোকদের কোন প্রকার অনুমতির প্রয়োজন হয় না। বরং সেই সময় শুধুমাত্র ছেলে এবং মেয়ে যদি বিয়ে করতে সম্মতি প্রদান করে। তাহলে কাজী অফিসের মধ্যে এই ধরনের কোর্ট ম্যারেজ গুলো করানো হয়ে থাকে। আশা করি কোর্ট ম্যারেজ কি সে সম্পর্কে আপনি পরিষ্কার ধারণা পেয়ে গেছেন।
কোর্ট ম্যারেজ এর বয়স
যেহুতু আপনি কোর্ট ম্যারেজ করতে চাচ্ছেন। সেহুতু অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যে, কোর্ট ম্যারেজ এর বয়স কত থাকতে হয়। কেননা আপনার বয়স যদি কম হয়। তাহলে কিন্তু আপনি কোর্ট ম্যারেজ এর মাধ্যমে বিয়ে করতে পারবেন না।
তো আপনি যদি ছেলে হয়ে থাকেন, তাহলে কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য আপনার বয়স 21 বছর হতে হবে। এবং আপনি যদি মেয়ে হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার বয়স ১৮ বছর হতে হবে। যদি আপনাদের বয়স পর্যাপ্ত হয়। তাহলে আপনি কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।
কোর্ট ম্যারেজ করতে কত টাকা লাগে | Court Marriage Cost In Bangladesh
যখন আপনি কোর্ট ম্যারেজ করবেন তখন আপনাকে বেশ কিছু টাকা খরচ করতে হবে। আর আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যারা আসলে জানে না যে। কোর্ট ম্যারেজ করতে কত টাকা লাগে। তো কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম অনুযায়ী সর্বপ্রথম আপনাকে একজন আইনজীবীর সহায়তা নিতে হবে।
এবং তিনি আপনাদের দু জনের একটি হলফনামা তৈরি করবে। যে হলফনামা টি 200 টাকার স্ট্যাম্প এর উপর আপনাদের দুজনের স্বাক্ষর থাকবে। এবং সেই স্টাম্প এর মধ্যে স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকবে। আপনারা দুজন নিজের স্ব ইচ্ছায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন।
তবে নিয়ম অনুযায়ী কোর্ট ম্যারেজ করতে মাত্র ২০০ টাকার স্ট্যাম্প এর প্রয়োজন হলেও। যখন আপনি কোর্ট ম্যারেজ করবেন, তখন আপনাকে বিভিন্ন কাজের জন্য। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় করার প্রয়োজন হবে। আর সেটা মূলত নির্ভর করবে আপনাকে যে আইনজীবী কোর্ট ম্যারেজের কাজে সহায়তা করবে, সেই আইনজীবীর উপর।
কোর্ট ম্যারেজ ফি?
কোর্ট ম্যারেজ ফি হলো ৩ হাজার টাকা ।কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে আপনার একটি আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর সেই আইনজীবী কোর্ট ম্যারেজের যাবতীয় কাজ গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করবে। আর যখন কোর্ট ম্যারেজ এর কার্যক্রম চলবে। তখন আপনাকে ২০০/- টাকার একটি স্টাম্প কিনে নিয়ে নিতে হবে। এছাড়া নিয়ম মতে আপনার আর কোন প্রকার কোর্ট ম্যারেজ ফি দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে যখন আপনি কোর্ট ম্যারেজ করবেন। তখন আপনার ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে।
কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব?
এবার মূল বিষয়ে আসা যাক, আমি কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। কারণ আপনি চাইলে বেশ কয়েক টি ধাপ অনুসরণ করে কোর্ট ম্যারেজ করতে পারবেন। আর সেই ধাপ গুলো নিয়ে আমি নিচে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করব।
- যখন আপনি কোর্ট ম্যারেজ করবেন। তখন আপনাকে অবশ্যই একজন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে।
- সাধারণ ভাবে আপনি একজন উকিল এর কাছে যেতে পারেন।
- এখন সেই আইনজীবী একটি স্টাম্প তৈরি করবে। যেখানে বর এবং কনের বিষয়ে যাবতীয় হলফনামা থাকবে।
- উক্ত স্টাম্প এর মধ্যে এটা স্পষ্ট করে লেখা থাকবে যে। আপনারা দুজন নিজের স্ব ইচ্ছায় এই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
- এরপর আপনাদের বিয়ের সাক্ষী সহ বর এবং কনে উক্ত হলফনামার মধ্যে স্বাক্ষর করতে হবে।
- সবশেষে যখন স্টাম্পের যাবতীয় কাজ শেষ হবে। তারপরে নির্দিষ্ট একটি কাজী অফিসের সাহায্য কাবিননামার মধ্যে সই করানো হয়।
- এরপর সেই কাবিননামা টি রেজিস্ট্রি করা হবে।
- এবং সেই সময়ে কাজী সাহেব কে বর এবং কনের বিভিন্ন প্রকারের ডকুমেন্টস যেমন, জন্ম নিবন্ধন ভোটার, আইডি কার্ড ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।
তো কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব যদি আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কে না জেনে থাকেন। তাহলে আপনি উপরের এই পয়েন্ট গুলো মনে রাখুন। কেননা এখানে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে যেম একজন নতুন মানুষ কিভাবে কোর্ট ম্যারেজ করতে পারবে।
কোর্ট ম্যারেজ ফরম ![কোর্ট ম্যারেজ ফরম]()
হিন্দু কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব?
যারা সনাতন ধর্মাবলম্বী অর্থাৎ হিন্দু। তাদের অনেকের মনে একটি প্রশ্ন রয়েছে। আর সেই প্রশ্নটি হল যে হিন্দু কোর্ড ম্যারেজ করা যায় কিনা। এবং যদি যায় তাহলে হিন্দু কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব। তো এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব যে, হ্যাঁ! আপনি যদি একজন হিন্দু হয়ে থাকেন। তাহলে ও আপনি কোর্ট ম্যারেজ করতে পারবেন।
তবে তার আগে জানতে হবে যে, হিন্দু কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়। মূলত যখন আপনি একজন সনাতন ধর্মলম্বী হয়ে কোর্ট ম্যারেজ করবেন। তখন আপনার বেশ কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে। যেমন:
- চারজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রয়োজন হবে। যারা আপনার বিবাহের সাক্ষী হিসেবে থাকবে।
- বিবাহর জন্য বর এবং কনের তিন কপি করে ছবি প্রয়োজন হবে।
- ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিতে হবে।
- উভয় এর অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
তো যদি আপনার নিকট উপরের এই ডকুমেন্ট গুলো থাকে। এবং আপনি যদি কোর্ট ম্যারেজ করতে চান। তাহলে আপনার আর কোর্ট ম্যারেজ করতে কোন প্রকারের ঝামেলায় পড়তে হবে না। তবে কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য হিন্দু ছেলে হলে ২১ বছর বয়স। এবং হিন্দু মেয়ে হলে ১৮ বছর বয়স হতে হবে।
এবার আপনাকে জানতে হবে যে, হিন্দু কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব। তো আপনি যদি হিন্দু হয়ে কোর্ট ম্যারেজ করতে চান। তাহলে আপনাকে সরাসরি কোর্টে যেতে হবে। এবং সেখানে গিয়ে আপনি আইনজীবীর সহায়তায় কোর্ট ম্যারেজ এর যাবতীয় কাজ গুলো সম্পন্ন করতে পারবেন।
কোর্ট ম্যারেজ এর নমুনা কপি PDF
কোর্ট ম্যারেজ সার্টিফিকেট | Court Marriage Certificate
আরো দেখুনঃ
কোর্ট ম্যারেজ নিয়ে আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, যদিও বা পরিবারের অনুমতি না নিয়ে কোট ম্যারেজ করা ঠিক না। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন। যারা জানতে চায় যে, কোর্ট ম্যারেজ কিভাবে করব। তো তাদের উদ্দেশ্যেই আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে। কারণ আজকের আর্টিকেলে আমি কোর্ট ম্যারেজ করার যাবতীয় উপায় গুলো উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি।
তবে এরপরও যদি আপনার কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কে কোন কিছু জানার থাকে। তাহলে অবশ্যই নিজে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর আর্টিকেল এর এই পর্যন্ত আসার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ। সাথে থাকুন, নতুন কিছু জানার জন্য।
