সাধু ভাষা কাকে বলে? | সাধু ভাষার জনক কে?
সাধু ভাষা কাকে বলে? | সাধু ভাষার জনক কে? | সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি? | What Is Sadhu Language?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সাধারণ গদ্য সাহিত্যে ব্যবহৃত বাঙ্গালা ভাষাকে বলা হয়, সাধু ভাষা। তবে এই সাধু ভাষা কাকে বলে উক্ত বিষয়টি কে আরো একটু সহজ ভাবে বলা সম্ভব। সেটি হলো, যে ভাষার মধ্যে সর্বনাম পদ ও ক্রিয়াপদের পুর্ণরুপে ব্যবহার করা হয়। মূলত তাকে বলা হবে, সাধু ভাষা।
তবে এই সাধু ভাষা কাকে বলে, তা নিয়ে আরো অনেক সংঙ্গা রয়েছে। যেগুলো এখন আমি আপনাকে ধাপে ধাপে জানিয়ে দিবো। সেইসাথে সাধু ভাষার জনক কে, সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আরো দেখুনঃ বাংলা সমার্থক শব্দ অভিধান
সাধু ভাষা কাকে বলে?
আমরা সকলেই জানি যে, সাধু ভাষায় যে বাক্যরীতি রয়েছে তা মূলত সুনির্ধারিত। কারণ, সাধু ভাষাতে আমরা আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করতে পারবো। সেটি হলো, সাধু ভাষার মধ্যে অধিক পরিমানে তৎসম শব্দের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি সাধু ভাষায় ক্রিয়াপদ এবং সর্বনাম পদের ব্যবহার পূর্ণরুপে হয়। তাই যদি আমরা সাধু ভাষা কাকে বলে সেই বিষয়টি কে সঙ্গায়িত করি। তাহলে বলবো,
”যে ভাষা অধিকাংশ সময় সংস্কৃত ভাষা কে অনুসরন করে। যেখানে ব্যবহার করা শব্দ গুলি সমাসবদ্ধ এবং সন্ধিবদ্ধ। এছাড়াও যে ভাষাতে ক্রিয়াপদ এবং সর্বনাম পদ এর পূর্ণরুপ ব্যবহার করা হয়। মূলত সেই ভাষা কে বলা হয়, সাধু ভাষা।”
তো আশা করি, সাধু ভাষা কাকে বলে তা আপনি উপরের আলোচনা থেকে পরিস্কার ভাবে বুঝতে পেরেছেন। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, সাধু ভাষার জনক কে।
সাধু ভাষার জনক কে?
আমরা সবাই জানি যে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হলো সাধু ভাষার জনক। তবে এর পাশাপাশি আমাদের আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। যেমন, সাধু ভাষার সূচনা হয়েছিলো, ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের শুরুর দিকে। কিন্তু আপনি কি জানেন, সাধু ভাষা শব্দটি প্রথম কে ব্যবহার করেন? -হয়তবা আমাদের অনেকের কাছে এই বিষয় টি এখনও অজানা রয়েছে।
মূলত রাজা রামমোহন রায় সর্বপ্রথম সাধু ভাষাকে তার একটি গ্রন্থের মধ্যে ব্যবহার করেছিলো। আর সেই গ্রন্থের নাম হলো, “বেদান্ত গ্রন্থ”।
সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
আমরা এতক্ষন ধরে সাধু ভাষা কাকে বলে ও সাধু ভাষার জনক কে সে সম্পর্কে জানলাম। তাই এবার আমরা সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে জানবো। কারন, আমরা যে সাধু ভাষার ব্যবহার করি। সেই সাধু ভাষার এমন অনেক বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন,
- সাধু ভাষাকে কখনই মানুষের প্রচলিত ভাষার উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়নি। আর সে কারণে সাধু ভাষাকে একটি দূর্ভেদ্য ভাষা বলা হয়।
- সাধু ভাষার মধ্যে আমরা এমন অনেক সংস্কৃত ভাষার শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করতে পারি।
- এই ভাষার মধ্যে ধ্বনিঝংকার অনেক বেশি। এর কারন হলো, সাধু ভাষা সংস্কৃত ভাষাকে অধিক পরিমানে অনুসরন করে থাকে।
- সাধু ভাষার মধ্যে আমরা যে হইতে, থাকিয়া, চাহিয়া ইত্যাদি শব্দ গুলো দেখতে পাই। সেগুলো মূলত তৎসম অনুসর্গের ব্যবহারিক রুপ।
- অন্যান্য শব্দের তুলনায় সাধু ভাষায় তৎসম শব্দের অধিক ব্যবহার হয়ে থাকে।
- সাধু ভাষার মধ্যে সর্বনাম পদ ও ক্রিয়াপদের পূর্ণরুপ ব্যবহার করা হয়।
আরো দেখুনঃ
- ভাষার ক্ষুদ্রতম একক কি? | ধ্বনি কত প্রকার ও কি কি?
- হরতাল কোন ভাষার শব্দ? | আগামীকাল হরতাল.
- প্রমিত ভাষা কাকে বলে? | প্রমিত ভাষার অপর নাম কি?
তো সাধু ভাষার যে সকল বৈশিষ্ট্য আছে। সেগুলো আপনি উপরের তালিকা তে দেখতে পাচ্ছেন। এবং আমি চেষ্টা করেছি, সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য গুলো কে উপরের তালিকা তে সঠিকভাবে উল্লেখ করার।
সাধু ভাষা নিয়ে আমাদের শেষকথা
আজকের আলোচনায় সাধু ভাষা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। যেমন, সবার শুরুতে আপনি জানতে পেরেছেন, সাধু ভাষা কাকে বলে। এবং তারপরে সাধু ভাষার জনক কে, এবং কিছু সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তো আশা করি, আজকের আলোচনা থেকে সাধু ভাষা কি তা আপনি পরিস্কার ভাবে বুঝতে পেরেছেন। আর এই ধরনের অজানা বিষয় গুলো জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ