মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান 2024
মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান 2024 | ফ্রান্স বনাম মরক্কো কোন দল বেশি শক্তিশালী? | Morocco vs France Stats 2024
আপনাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান সম্পর্কে জানতে চান। তার আগে কিছু কথা বলে নিতে চাই। কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ -এ একের পর এক যে চমক আসছে, তা সত্যিই অভাবনীয়। প্রথম থেকে বাঘা বাঘা দলগুলোকে হারিয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো দল জায়গা করে নিচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনাল আর সেমিফাইনালে। মরক্কোর কাছে পর্তুগালের হার যেন অবিশ্বাস্য এক বিষয়। মরক্কো আর পর্তুগাল যখন কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখনও পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো সান্তোস ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বেঞ্চে বসিয়ে রেখে তার বদলে নামিয়েছেন রামোসকে।
কিন্তু প্রথমবারের মতো এবার আর হ্যাট্রিক করতে পারেনি রামোস। মরক্কোর গোলরক্ষক যেনো অদৃশ্য বলে একের পর এক বল আটকে দিয়েছেন। আর অন্যদিকে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের ম্যাচেও দেখা যায় নিই ভিন্নতা। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স উঠে এসেছে সেমিফাইনালে। এবার মরক্কো আর ফ্রান্স মুখোমুখি হবে সেমিফাইনালে। তবে অনেকেই জানেন না, মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোন দলের হার জিতের পরিমাণ কেমন। এই লেখাতে আজ আমরা তা নিয়েই আলচনা করব।
আরো দেখুন:
- ব্রাজিল বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান.
- আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান.
- আর্জেন্টিনা vs Brazil পরিসংখ্যান.
মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান
মরক্কো ও ফ্রান্স ইতিহাসে, একই মাঠে সামনাসামনি খুব কম সময় খেলতে পেরেছে। সব মিলিয়ে ১১ টি ম্যাচ। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে ফ্রান্স। তো, নিচে দেয়া মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান থেকে আপনারা দেখতে পারবেন, মরক্কো ও ফ্রান্সের খেলা কবে, কোন প্রতিযোগীর অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর কোন দল কত গোলে জিতেছে?
তারিখ/সময় | দল | গোল | বিজয়ী দল | প্রতিযোগী |
২৮ এপ্রিল, ১৯৬৩ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ২-১ | মরক্কো | A v B |
২০ মার্চ, ১৯৬৬ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ২-২ | ম্যাচ ড্র | B v A |
১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৭ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ০-২ | ফ্রান্স | Mediterranean Games |
৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ১-১ | ফ্রান্স | Mediterranean Games |
১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৭ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ০-০ | ম্যাচ ড্র | Mediterranean Games |
৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ১-২ | ফ্রান্স | Four Nations Tournament |
২৩ জানুয়ারি, ১৯৯৬ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ০-১ | ফ্রান্স | Under 21 v – A |
২৯ মে, ১৯৯৮ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ২-২ | ফ্রান্স | King Hasan II Cup |
২০ জানুয়ারি, ১৯৯৯ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ০-১ | ফ্রান্স | International Friendly |
৬ জুন, ২০০০ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ১-৫ | ফ্রান্স | Hasan II Tournament |
১৬ নভেম্বর, ২০০৭ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ২-২ | ম্যাচ ড্র | International Friendly |
মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান দেখে আপনারা এর মধ্যে নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারেছেন পূর্বের বছরগুলোতে মরক্কো বনাম ফ্রান্স ম্যাচগুলো কেমন ছিল। যদিও মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী খুব বেশী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি।
মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী ম্যাচে হারজিতের হিসাব বিশ্লেষণ
মরক্কো ও ফ্রান্স মোট ম্যাচ খেলেছে ১১ টি। আর মরক্কো এর মধ্যে বিজয়ী হতে পেরেছে একটিতে। ফ্রান্স বিজয়ী হয়েছে ৭ টিতে। আর ড্র এর পর্যায়ে গেছে ৩ টি ম্যাচ। তাহলে সে হিসাব অনুযায়ী,
- মরক্কোর জিতে যাওয়ার হার- ৯.০৯ %
- ফ্রান্সের জিতে যাওয়ার হার- ৬৩.৬৩ %
- ম্যাচ ড্র হওয়ার হার- ২৭.২৭ %
শতকরার হিসাব অনুযায়ী মরক্কোর বিজয়ী হওয়ার হার খুবই কম। আর ড্র মাঝামাঝি। ফ্রান্সের জিতে যাওয়ার হার মরক্কোর তুলনায় সাতগুন বেশি। তাছাড়া মরক্কো ও ফ্রান্স বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতায় একসাথে ম্যাচ খেলেছে। মোট ১১ টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে দল দুটির। তবে খেলেছে ৮ টি প্রতিযোগিতার অধীনে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেলেছে,
- Mediterranean Games এর অধীনে- ৩ বার
- International Friendly এর অধীনে – ২ বার
- A v B এর অধীনে – ১ বার
- B v A এর অধীনে -১ বার
মরক্কো ও ফ্রান্সের বড় জয় ও হার
২০০০ সালের ৬ জুনের খেলায় ফ্রান্স মরক্কোর বিপক্ষে ৫ টি গোল করে। আর মরক্কো ফ্রান্সের বিপক্ষে করে ১ গোল। এই কারণে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্স জয়ী হয়। আর এটা ছিল মরক্কোর বিপক্ষে ফ্রান্সের বড় জয় ও মরক্কোর বড় হার। ম্যাচটি হয়েছিল Hasan II TOURNAMENT এর অধীনে।
মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৮ এপ্রিল, ১৯৬৩ তে ফ্রান্সের বিপক্ষে মরক্কো ২ গোল করে। আর ফ্রান্স করে এক গোল। এজন্য মরক্কো জিতে যায়। মরক্কো অবশ্য ফ্রান্সের সাথে একবারই জয়ী হয়েছিল। এটাই ছিল মরক্কোর কাছে ফ্রান্সের বড় হার ও মরক্কোর বড় জয়। এই ম্যাচটিই ছিল ইতিহাসে মরক্কো ও ফ্রান্সের প্রথম ম্যাচ। ম্যাচটি হয়েছিল A v B এর অধীনে।
মরক্কো বনাম ফ্রান্স কোন দল বেশি শক্তিশালী?
মরক্কো আর ফ্রান্সের পূর্বের ইতিহাস ঘাঁটতে দেখা যায়, মরক্কো খুবই দূর্বল দল। বিশেষ করে ফ্রান্সের কাছে। কিন্তু ভালো করে লক্ষ করলে এটাও স্পষ্ট যে, মরক্কো ও ফ্রান্স সর্বশেষ একসাথে মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৭ সালে। কিন্তু এবারের কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোর যে মূল শক্তি, তিনি হলেন গোলকিপার ইয়াসিন বুনু। তিনি একাই এবারের ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। তাই পূর্বের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কে শক্তিশালী তা বলা খুব কষ্টসাধ্য।
অন্যদিকে ফ্রান্সও ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নের ট্রফি জয় করা দল। তাই এবারও বিশ্বকাপের ট্রফি নিতে চাইবে। কিন্তু শেষটা দেখা যাবে ১৫ ডিসেম্বর। আবার কিলিয়ান এমবাপ্পেও তো আগের ম্যাচগুলোতে ছিলেন না। তাই কোন দল শক্তিশালী এটা বলতে গিয়ে যদি আগের পরিসংখ্যান অনুসরণ করি, তাহলে ফ্রান্সই শক্তিশালী হিসেবে পরিচয় পাবে। তবে মরক্কোও ছাড় দেয়ার নয়। তিনটি ম্যাচ তারা পুরোপুরি ড্র করেছে।
ফিফা বিশ্বকাপ লাইভ ২০২৪
এবারের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ম্যাচটা হয়ে গেলে মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান এ আরো একটা নতুন ম্যাচ যোগ হয়ে মোট ম্যাচের সংখ্যা হবে ১২ টি। তাছাড়া মরক্কো ও ফ্রান্স এর আগে কোনোদিন একত্রে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ খেলেনি। তার উপর টানা ১৫ বছর পর মুখোমুখি হত যাচ্ছে দল দুইটি। পর্তুগালের বিপক্ষে মরক্কোর জয় চিরচেনা হয়ে থাকবে ঐতিহাসিক হয়ে।
মরক্কো ১-০ গোলে পর্তুগালকে হারিয়ে দেবে এটা অনেকে ভাবতেও পারেননি। তবে গোলরক্ষক ইয়াসিন না থাকলে, পর্তুগাল প্রচুর গোল করত সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মরক্কোর সবচেয়ে বড় শক্তি হলেন ইয়াসিন বুনু। তিনি এমনভাবে বল ধরতে চেষ্টা করেন, যেন হাত দিয়ে বলের দিকে ইশারা করলেই চুম্বকের মতো আকর্ষিত হয়ে হাতে চলে আসছে বল। মরক্কো এবার স্পেনকে হারিয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে।
আর কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে পর্তুগালকে হারিয়ে। গোল দিতে না পারলেও নিজেদের জালে অন্য পক্ষের বল প্রবেশ করতে দেবে না মরক্কো। তবে ফ্রান্সও কম যাবে না। কিলিয়ান এমবাপ্পে তার সেরাটা দিয়েই মাঠের মধ্যে আক্রমণ চালাবে। শেষ পর্যন্ত যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে ম্যাচে। তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে সেমিফাইনালের ম্যাচের জন্য।
সর্বশেষ কথা: আশা করি মরক্কো বনাম ফ্রান্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী আপনারা এই দল দুইটির ম্যাচ সম্পর্কে সবটা বিস্তারিত জানতে পেরেছন। এরকম আরো নতুন নতুন লেখা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। আর লেখাটি নিয়ে কোনো মন্তব্য থাকলে বা অভিযোগ থাকলে, তা জানিয়ে দিন কমেন্ট সেকশনে। আর আজকের পোস্টটি যদি ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।