পরিযায়ী পাখি কাকে বলে?
পরিযায়ী পাখি কাকে বলে? | পরিযায়ী পাখির প্রকারভেদ
পাখির কলকাকলি পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। মনের ক্লান্তি দূর করতে আমরা যখন নিরিবিলি কোথাও ঘুরতে চলে যাই কিংবা গাছগাছালি সবুজে ঘেরা কোথাও বেড়াতে যাই তখন পাখির কলকাকলি যেনো এক অন্যরকম প্রশান্তি দেয় মনের মধ্যে। আর এই প্রশান্তির ছোঁয়া অধিকাংশ সময় পাওয়া শীতকালে। শীতকালে আসে নানারকম অথিতি পাখি। আর এই অথিতি পাখি দেখার জন্য ছুটে যায় বহু মানুষ।
অথিতি পাখির কলকাকলি তে মন ছেয়ে যায় প্রশান্তিতে। আর শীতকালেই অনেক পাখি হয়ে উঠে পরিযায়ী। পরিযায়ী শব্দটির সাথে আমরা অনেকেই হয়তো পরিচিত। আর আজকের এই আর্টিকেল টি পরিযায়ী পাখি কাকে বলে তার উপর। পরিযায়ী পাখি কাকে বলে এটা হয়তো অনেকের মনের মধ্যে কৌতুহল বাসা বাঁধতে পারে। তবে চলুন, কৌতুহলের বাঁধ ভাঙ্গা যাক।
পরিযায়ী পাখি কাকে বলে? | What is a migratory bird?
ইংরেজি শব্দ Migration. এর সঠিক পরিভাষা হচ্ছে সাংবাতসরিক পরিযান। অর্থাৎ, একটি বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে এই পাখিদের আগমন ঘটে। পরিযায়ী পাখি বলে এর ব্যাখ্যা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন ভাবে দিয়েছেন। তবে সহজ বোধ্যতার জন্য পরিযায়ী পাখি কাকে বলে তা সহজ করেই তুলে ধরা হলোঃ
যেসব পাখিরা প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যায় এবং আরেকটি ঋতুর শুরুতে নিজের দেশে আবার ফিরে আসে তাদের কে পরিযায়ী পাখি বলা হয়। যেমনঃ পাফিক্স, গোল্ডেন সারস, সাইবেরিয়ান ক্রেন প্রভৃতি।
বলা হয়ে থাকে যে, পৃথিবীর প্রায় ১০,০০০ প্রজাতি পাখির মধ্যে প্রায় ১,৮৫৫ প্রজাতি পাখি পরিযায়ী পাখি।
এতক্ষণ আমরা জানলাম, পরিযায়ী পাখি কাকে বলে। এবার চলুন জেনে নেই এর প্রকারভেদ সম্পর্কে।
পরিযায়ী পাখির প্রকারভেদ
দূরুত্বের উপর নির্ভর করে পরিযায়ী পাখি কে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমনঃ স্বল্প দৈর্ঘ্য, মধ্য দৈর্ঘ্য এবং দীর্ঘ দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখি। চলুন বিস্তারিত একটু জেনে নেই।
স্বল্প দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখিঃ স্বল্প দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখি গুলো সাধারণত স্থায়ী হয়ে থাকে। শুধুমাত্র খাদ্যাভাব দেখা দিলে এরা অন্যত্র চলে যায় একটা সময়ের জন্য। পরবর্তীতে আবার ফিরে আসে। যেমনঃ পাপিয়া, চাতক ইত্যাদি।
মধ্য দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখিঃ মধ্য দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখীরা মূলত স্বল্প দৈর্ঘ্য পারিযায়ী পাখিদের তুলনায় বেশি সময় ধরে পরিযান ঘটায়। এবং এরা প্রায়ই পরিযানে চলে যায়।
দীর্ঘ দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখিঃ এ জাতীয় পাখিরা বেশ বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে পরিযান ঘটায়। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেয় এই দীর্ঘ দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখিরা। যেমনঃ লালশির, নীলশির ইত্যাদি।
আরো দেখুনঃ বাংলাদেশের আয়তন কত?
পরিশেষে বলা যায়, হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে পাখিরা যে পরিযান করে এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। এরা হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে পরিযানে গেলেও নির্দিষ্ট সময় পর এরা ঠিকই নিজেদের স্থান চিনে ফিরে আসে। নিজেদের পথ খুঁজে নেয়। সত্যিই এ যেনো সৃষ্টিকর্তার এক অসাধারণ সৃষ্টির মহিমা।